কুষ্টিয়ার শহরতলী মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে বাবা ও তার সাত বছরের শিশু সন্তানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ বলছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার পর নিহত রেজাউল তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনী নিয়ে বেশ জটিলতায় ভুগছিলেন। যার জন্য সে তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি। সেই ক্ষোভ থেকেও এই পথ বেছে নিতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। নিহত রেজাউল করিম মধু শহরের আলফা মোড় এলাকার বিষ্ণুপদ রায়ের ছেলে।
স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে রেজাউল করিম মধু ধর্মান্তরিত হয়ে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আসাদুল মণ্ডলের মেয়ে শেফালি খাতুনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তাঁর নাম ছিল মধুসূদন রায়। স্ত্রী অসুস্থ থাকায় বেশ কিছু দিন ধরে রেজাউল আলফা মোড়ের শ্বশুড় বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
পুলিশ ও প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানাগেছে, মধু আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ছেলে মুগ্ধকে নিয়ে হরেকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সন্তানকে নিয়ে ফিরে না আসায় মা শেফালি পাশেই তাঁদের ভাড়া বাসায় আসেন। এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি করেন। এরপর কোনো সাড়া না পেয়ে জানালার ছিদ্র দিয়ে দেখতে পায় তাঁর স্বামী ও সন্তান ঘরের মধ্যে একই রশিতে ঝুলে আছে। তাঁর আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের পাঠায়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা বলেন, ‘এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এখানে আত্মহত্যা ও হত্যার দুইটি ঘটনা থাকতে পারে। ছেলেকে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যা করতে পারে।
স্বজনদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, রেজাউল ধর্মান্তরিত হওয়ার পর থেকে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনী নিয়ে বেশ জটিলতায় ভুগছিলেন। যার জন্য তিনি তাঁর ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি। এই নিয়ে তাঁর বেশ ক্ষোভ ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে জানা যাবে।