গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হোটেলের সরবরাহকৃত নষ্ট খাবারের বিল দিতে না চাইলে ট্রাফিক পুলিশের এক পরিদর্শকের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়েছে হোটেলের মালিকের ছেলে ও কর্মচারীরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার সফিপুর বাজারে এ ঘটনাটি ঘটেছে । এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হোটেলের মালিকের মেয়ের জামাইসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আহত হলেন, গাজীপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোঃ মেহদী হাসান (৪২)।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মেহেদী হাসান কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকায় একটি বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থাকেন। ওই দিন তার বাসায় কেউ না থাকায় তিনি দায়িত্ব পালন শেষে রাত ১০টার দিকে ইমা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে যান। ওই সময় তিনি সিভিল পোশাকে থাকায় হোটেল মালিকের ছেলে ও তার কর্মচারীরা কেউ চিনতে পারেনি তিনি পুলিশ কর্মকর্তা।
হোটেলে রাতের খাবারের জন্য অর্ডার করলে তাকে রুটি, ডাল ও হালিম পরিবেশন করা হয়। খাবার সামনে দিতেই ডাল ও হালিম থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় সেই খাবার তিনি ফেরত দেন। দুর্গন্ধযুক্ত নষ্ট খাবার ফেরত দিলেও হোটেলের ক্যাশে থাকা হোটেল মালিকের মাদকাসক্ত ছেলে অলিউল্লাহ ওরফে শান্ত তার কাছে খাবারের বিল দাবি করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে নেশাগ্রস্থ অলিউল্লাহ কাচের গ্লাসের কিছু অংশ ভেঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তার মুখে আঘাত করে। এ সময় হোটেলের কর্মচারীরাও তার উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে।
পরে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সফিপুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ রাতেই অভিমান চালিয়ে হোটেল মালিকের মেয়ের জামাই সাইফুল্লাহ সুমন, শাফায়াত হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মমিনুল ইসলাম, জাহিদ হোসেন ও রাকিবকে গ্রেপ্তার করে। তবে এ ঘটনার মূল হোতা অলিউল্লাহ পালিয়ে যান।
গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার মুল হোতাকে গ্রেপ্তার করতে পারনি পুলিশ।
ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মেহেদি হাসান জানায়, হোটেলের ক্যাশে থাকা ছেলেকে আমি বলেছি নষ্ট থাকায় হালিম ও ডাল খাইনি তারপরও কেন বিল ধরেছেন। তখন সে আমার সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে গ্লাস ভেঙ্গে আমার মুখে আঘাত করে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, এ ঘটনায় আহত ওই পুলিশ সদস্য বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে ঘটার মুল হোতা হোটেল মালিকের ছেলে পালিয়ে গেছে।