মেহেরপুর সদর উপজেলার কালিগাংনী গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৯জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার সময় কালিগাংনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন-কালিগাংনী গ্রামের কারিমলের ছেলে আবুল কালাম (৫০), আবুল কালামের ছেলে লিজন হোসেন (২৫), আবুল কালামের শশুর সবদুল হোসেন (৬৫), আমজাদ হোসেন (৭০), আকছার আলী, (৬৫), উত্তরশালিকা গ্রামের বদর উদ্দিন (৬০)।
অন্যপক্ষের আহতরা হলেন-কালিগাংনী গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ও কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার (৫৫), ছেলে নাহিদুজ্জামান রাসেল (১৬) আজিজুর হক পাতান মন্ডলের ছেলে ফুরকান আলী (৪০)। আহতদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ফুরকান আলীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
আহত সাবদুল হোসেন জানান, কালিগাংনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি ৬শতক খাস জমি ২০/২৫ বছর দখল করে চাষাবাদ করে আসছে কারিমলের ছেলে আবুল কালাম। উক্ত জমিটি আজিজুল হক পাতান আদালত থেকে ডিক্রি পেয়েছেন বলে বিভিন্ন জায়গায় বলতে শোনা যায়।
উক্ত জমি প্রতিবছরের ন্যায় সকালে আবাদ করার জন্য চাষ করতে যায় আবুল কালাম। এসময় আজিজৃুল হকের ছেলে ফুরকান আলী ও কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার ও তার লোকজন বাধা প্রদান করে। এসময় আজিজুল হক পাতানের সাথে কাগজপত্র দেখতে চান আবুল কালাম। আজিজুল হক তাকে কাগজপত্র দেখাতে রাজি না হলে শুরু হয় বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
এসময় ওৎ পেতে থাকা আজিজুল হক পাতানের লোকজন রামদা, লাঠি ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। সংঘর্ষে আহতরা হাসপাতালে আসতে চাইলে আজিজুল হকের লোকজন রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে রাখে এবং আহতদের হাসপাতালে যেতে বাধা প্রদান করে। স্থানীয়রা বৈকুন্ঠপুর পুলিশ ক্যাম্পে মোবাইল করলে পুলিশের একটি টীম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অবরুদ্ধ আহতদের পুলিশের সহায়তায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়।
আহত আকছার আলী জানান, আজিজুল হক পাতান তার জামাতা আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের বিভিন্ন মানুষের কৃষি জমি ও বাড়ি দখল করতে শুরু করেছে। কেউ তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেনা। যে মুখ খুলতে যায় সেই তাদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। তাদের অত্যাচারে গ্রামের মানুষ এখন অসহায় হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কালিগাংনী গ্রামের বাবুল আকতার জানান, হৈচৈ শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছিলাম। এসময় কালামের ছেলে লিজন পিছন দিক থেকে আমাকে মার শুরু করে। আমাকে রক্ষা করতে আমার শ্যালক ফুরকান এগিয়ে আসলে তাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে পুলিশ এবং স্থানীয়রা ঘটনা স্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। মেহেরপুর সদর থানার ওসি শেখ কনি মিয়া জানান,মারামারির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত শান্ত রয়েছে। তবে কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।