ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ পেতে এক কোরিয়া প্রবাসীর ৬০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারণার দুই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। প্রেমের সম্পর্ক ধরে প্রতারণায় এক কোরিয়া প্রবাসীর দুলাভাইয়ের মামলায় বগুড়া থেকে প্রেমিকা তহমিনা খাতুন (৩০) ও তার স্বামী আজাদুল ইসলাম (৪৬) গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে সদর উপজেলার বাড়িবাকা গ্রামের ব্যবসায়ী বিল্পব হোসেনের দায়ের করা মামলায় একই গ্রামের জয়নালের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৫) কে নিলফামারী জেলার সৈয়দপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সদর থানায় আলাদা দু’টি মামলা রয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ওসি) সাইফুল আলম জানান, ২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ান প্রবাসী সদর উপজেলার বেতলাপাড়া গ্রামের সাইদের সাথে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের বিবিএ পড়া শিক্ষার্থী তহমিনা খাতুন নিজের নাম কনিকা ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ম্যাসেঞ্জারে নিজের ছবি না দিয়ে অন্য এক নারীর ছবি দিয়ে তাকে আকৃষ্ট করে। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে আলাদা আলাদা বিকাশ নম্বরে টাকা নেওয়া শুরু করে। সর্বশেষ ৫ মাসে সাইদকে ব্লাকমেইল করে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তহমিনা।
এভাবে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৯ টি সিমে সাইদের কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নেয় সে। সর্বশেষ সাইদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তহমিনাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে কক্সবজারে একটি অপহরন মামলা করা হয়েছে বলে সাইদের পরিবারকে জানানো হয়। সেই মামলা নিষ্পত্তি করতে ৭ লাখ টাকা লাগবে বলে পরিবারের কাছে চাপ দেওয়া হয়। সব ঘটনায় তহমিনা মুঠোফোনে নিজের কন্ঠ পরিবর্তন করে পুরুষ কন্ঠে এই প্রতারণা শুরু করে। এতে সন্দেহ হয় পরিবারে।
বিষয়টি মেহেরপুর সাইবার ক্রাইম সেলকে জানান সাইদের দুলাভাই সোহেল রানা। পরে সে বাদি হয়ে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থেকে তহমিনা ও তার স্বামী আজাদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ডিবি ও সাইবার ক্রাইম সেলের একটি দল। গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। এ ঘটনায় জড়িত তহমিনার বন্ধু একই উপজেলার চাচাইতারা গ্রামের মেসার্স এস.আর এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধীকারী রবিউল ইসলামের নাম উঠে আসে। সে ও তহমিনা অনলাইন একটি বেটিং সাইডের সাথেও জড়িত বলেও তথ্য পায় পুলিশ।
তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানান ওসি সাইফুল আলম। এদিকে সদর উপজেলা বাড়িবাকা গ্রামের সার ও কিটনাশক ব্যবসায়ী বিপ্লব হোসেনের দায়ের করা মমালায় নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থেকে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ডিবি ও সাইবারক্রাইম সেলের একটি দল। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় এক কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাবার অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা রয়েছে।