পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক সন্তানের মা প্রতারণার মামলা করলেন তার পরকিয়া প্রেমিক আরেক আর এক সন্তানের পিতার নামে। পরকিয়া প্রেমিকের নাম কামরুল ইসলাম। সে মহেন্দ্র চালক। তার বাবার নাম চান মিয়া সেও মহেন্দ্র চালক। তার বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জ প্রধানাবাদ পেট্রোল পাম্প এলাকায়। সে ১ সন্তানের বাবা।
আর পরকিয়া প্রেমিকাও ১ সন্তানের মা। তার বাবার বাড়ি দন্ডপাল ইউনিয়নের খগেরহাট জঙ্গলীপাড়া এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামে।
জানা যায়, প্রেমিক কামরুল ইসলাম বিবাহিত। তার ১ সন্তান রয়েছে। কামরুল ইসলামের শ্বশুর বাড়ি কালীগঞ্জ বাজারের অটো রাইসমিল এলাকায়। কামরুল ইসলাম প্রায় ৬/৭ মাস থেকে তেলীপাড়া এলাকার করতোয়া নদীর চর থেকে বালু পরিবহন করতো। নদীর চর এলাকায় ওই মহিলার শ্বশুর বাড়ি। নদী এলাকা থেকে বালু পরিবহন করার সময় ওই মহিলার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে গড়ে ভালোবাসার সম্পর্ক। তারা প্রায় প্রতিদিন দেখা স্বাক্ষাত করতে থাকে।
পরবর্তীতে তারা পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেয়। ৩০ এপ্রিল সকালে কামরুল ইসলাম মোটরসাইকেল যোগে ওই মহিলার শ্বশুর বাড়ির পার্শ্বে অবস্থান নেয়। বাড়ি থেকে বের হয়ে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। পথিমধ্যে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে দেখে ফেলে ওই মহিলার শ্বশুর বাড়িতে আটক করে রাখে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামেদুল ইসলাম, দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায়, সুন্দরদীঘি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম ও দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ফরিদ হাসান স্বপনসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত হন। তারা স্থানীয় ভাবে মিমাংসার জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
কামরুল ইসলাম বলেন ওই মহিলার সাথে তার প্রায় ৫ মাস থেকে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমরা বিয়ে করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করার পর জানাজানি হয়ে গেলে আমাদের কে বাড়িতে আটক করে রাখে।
ওই মহিলাও ভালোবাসার কথা স্বীকার করে বলেন তার সাথে প্রায় ৫ মাস আগ থেকে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমরা বিয়ে করার জন্য পরিকল্পনাও নিয়ে ফেলি। এক পর্যায়ে আমরা পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
এদিকে কামরুল ইসলামকে আটক করে রাখার পর কামরুল ইসলামের স্ত্রী তার বাবাকে ঘটনাটি জানায় যে, তেলীপাড়া এলাকায় তার স্বামীকে এক মহিলার বাড়িতে আটক করে রাখা হয়েছে। খবর জানানোর পরে কামরুল ইসলামের শ্বশুর সলেমান আলী খবর পেয়ে তার বেহাই চান মিয়ার বাড়িতে ছুটে এসে বিস্তারিত জানতে পারে। পরে সলান আলী তার মেয়ে কে নিয়ে দেবীগঞ্জ থানায় স্বামী উদ্ধারের জন্য অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পেয়ে দেবীগঞ্জ থানার দুই এসআই তাদের ফোর্স নিয়ে তেলীপাড়া এলাকায় বাড়িতে যান। পরে সেখান থেকে ছেলে কামরুল ইসলামে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়। তার সাথে ওই মহিলাকেও সাথে নিয়ে আসা হয়। নিয়ে আসার পর ওই মহিলাকে পিতার হেফাজতে দেয়া হয়।
পরদিন পহেলা মে ওই মহিলা বাদি হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় কামরুল ইসলামের নামে প্রতারনার মামলা করেন। সে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ওই মহিলা বর্তমানে পিতার বাড়ি খগেরহাট জঙ্গলীপাড়া রয়েছে।