কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই মেহেরপুর পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কের ওপর সড়কে রাখা হচ্ছে নির্মাণ সামগ্রী। কোথাও কোথাও সড়কের অর্ধেক দখল করেই চলছে নির্মাণ কাজ। এতে সংকুচিত হয়ে উঠছে সড়কগুলো। এতে করে সড়কগুলো যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে তেমনি তৈরী হচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
পৌরবাসী বলছে, আইন অনুযায়ী সড়কে ইট, বালু, সিমেন্ট ও পাথরসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী রাখা বেআইনি। কিন্তু তারপরও এ বিধান কেউ মানছেন না। আবার অনেকে রাস্তা ও ফুটপাতের ওপর তাদের মালপত্র রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলে আসলেও পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো জোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলেও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই সড়ক ও ফুটপাত দখল করে দীর্ঘদিন যাবৎ নির্মাণ সামগ্রী রেখে ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে করে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। এরপরও নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। আগে কম থাকলেও বর্তমান সময়ে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী বেশি রাখা হচ্ছে। ব্যবস্থা না নেয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে অনেকেই মনে করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চৌধুরী ভবনের পাশে একটি ভবন নির্মাণ হচ্ছে। ভবন নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট, বালু, খোয়া, বাঁশ-কাঠ, রড, রাবিস ও মিক্সিন মেশিন ইত্যাদি সড়কের উপর মজুদ করে রাখা হয়েছে। ফলে ওই সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ওইসব নির্মাণ সামগ্রীর কারণে পথচারীরা ফুটপাত দিয়েও হাটতে না পারায় ঝুঁকি নিয়ে সড়ক দিয়েই হাটা-চলা করতে হচ্ছে তাদের।
পথচারী মনিরুল ইসলাম বলেন, বেশকিছুদিন ধরেই এ সড়কের উপর পাথর, বালু, ইট ও বাঁশ-কাঠ রেখে ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। এতে সাধারণ পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে। এসব মালামালের কারণে সড়ক সংকুচিত হয়ে গেছে। যেকোন সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।
ইজিবাইক চালক রুবেল বলেন, সবসময় এ পথ দিয়েই যাতায়াত করি। এই রাস্তা দিয়ে পরিবহণ, ট্রাক, লোকাল বাসসহ ভ্যান,অটো,রিকশা সবসময়ই চলাচল করে। এই রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। আর এই রাস্তার অর্ধেক দখল করে এভাবে নির্মাণ সামগ্রী রেখে চলাচলের জন্য রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ভ্যানচালক তাইজুল বলেন, কি বলবো, আমরা গরিব মানুষ। রাস্তার উপর মালামাল রেখে রাস্তা আরো ছোট হয়ে যাচ্ছে। একটা বড় গাড়ি আসলে আর একটি ভ্যান যাওয়ার উপায় নেই। এত বড় রাস্তার অর্ধেকটা মালামালে দখল হয়ে আছে। তাই দেখে শুনে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। যেকোন সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মেহেরপুর গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পৌর শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করছি। পৌর নাগরিকদের বারবার সতর্ক করা হয়েছে। আমি নিজে উপস্থিত থেকে রাস্তায় রাখা ইট, বালু, রডসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী তুলে নিতে নির্দেশ দিয়েছি। পৌরবাসী যদি নিজের শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে সহযোগিতা না করেন তবে তা সম্ভব নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি পৌর নাগরিকদের সচেতন করে যাতে এ শহরটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা যায়।