পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ব্যাপক নজরদারী, সামাজিক জনসচেতনতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা, গাড়ি চালকদের সচেতনতা সৃষ্টি, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা, ওভার স্প্রিটে গাড়ি চালানো, গাড়ির ফিটনেস না থাকা, গাড়ি চালানো সময় হেলমেট ব্যবহার না করা, অধিক ওজন বহন করে গাড়ি চালানো, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন না থাকা, গাড়ির রোড ট্যাক্স না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিভিন্ন অপরাধে গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে মামলা সহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কারণে সড়কে এখন দুর্ঘটনা কম ঘটছে। এর ফলে মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আসছে।
হাইওয়ে থানার রেকর্ড সুত্রে জানা যায়, গত এপ্রিল মাসে তেতুলিয়া হাইওয়ে থানায় মোট মামলা হয়েছে ১৫৩ টি। পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া হাইওয়ে থানায় জনবল কম থাকার পরেও সড়কে দুর্ঘটনা রোধে কাজ করছে তেতুলিয়া হাইওয়ে থানা। শ্রমিক ইউনিয়ন, মালিক সমিতির নেতাদের সাথে সমন্বয় করেই কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা।
হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, এ থানায় ৩৮ টি পথ পথ থাকলেও সেখানে কর্মরত রয়েছে ১৯ জন। এরমধ্যে অনেকেই অসুস্থতার জন্য ছুটি, থানায় ডিউটি ও সাধারণ ছুটি নেওয়ার কারণে অনেকেই অনুপস্থিত থাকে। তখন তাদেরকে ছাড়াই হাইওয়ে থানা পরিচালনা করতে হয়।
থানায় ৩৮ টি পদের মধ্যে সাব ইন্সপেক্টর দুইজন, এসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর দুইজন সার্জেন্ট তিনজন, কনস্টেবল ২৬ জন এবং ওসি একজন থাকার কথা রয়েছে কিন্তু সার্জেন্ট সহ অনেক পদেই শুন্য রয়েছে।
মহাসড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। চালকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তারা বিতরণ করছেন লিফলেট। বিভিন্ন সময় তারা ওপেন হাউস ডে পালন করছে এলাকার সুধীমহল ও চালকদের কে নিয়ে। রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য হাইওয়ে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা মৃত্যু বরন করলর তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কে যানজট নিরসনের জন্য হাইওয়ে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও চোরাই পণ্য, মাদকদ্রব্য সহ অবৈধ মালামাল পরিবহনের সময় হাইওয়ে পুলিশ যদি গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে তাহলে তারা তল্লাশি শুরু করে সেসব মালামাল আটক করতে সহযোগিতা করেন।
অনেক জনসাধারণ বিপদে পড়লে বা পুলিশের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লে তারা ৯৯৯ পোন দেন। তখন পুলিশের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।
এছাড়াও ভিআইপি ব্যক্তিদের প্রটোকল দিয়ে থাকেন এবং বিভিন্ন বাস, ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় যানজট নিরসন করে থাকেন। প্রতিদিন হাইওয়ে পুলিশ পেট্রোল ডিউটি দিয়ে তাদের কর্ম এলাকায় সকল খোঁজখবর নেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণও করেন।
তেতুলিয়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি জাকির হোসেন মোল্লা জানান, আমি ২০২২ সালের তিন অক্টোবর তেতুলিয়া হাইওয়ে থানায় যোগদান করি। যোগদান করার সময়ের পর থেকে এখানে বর্তমান পর্যন্ত ৩৮ টি পথ থাকলেও অধিকাংশ পদই শূন্য রয়েছে। জনবল কম থাকার কারণে কাজ করতে হচ্ছে কষ্ট করে। তারপরও অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি । আমি আজ যোগদান করার পূর্বে এ থানায় মামলা হতো ৪০ থেকে ৫০ টি। বর্তমানে এ থানায় ঘরে মামলা হচ্ছে ১৪০ থেকে পঞ্চাশটি। এসব মামলার মূল কারণ হচ্ছে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা, ওভার স্প্রিটে গাড়ি চালানো, গাড়ির ফিটনেস না থাকা, গাড়ি চালানো সময় হেলমেট ব্যবহার না করা, অধিক ওজন বহন করে গাড়ি চালানো, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন না থাকা, গাড়ির রোড ট্যাক্স না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিভিন্ন অপরাধে।
তিনি আরো জানান, আমাদের হাইওয়ে থানায় যারা কর্মরত আছে তাদের শরীরে বডি অন ক্যামেরা লাগানো আছে। এ ক্যামেরাটি সবসময় অন করা থাকে। যার কারণে কোন কর্মকর্তা কর্মচারী চালকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে পারেনা। তারা অত্যন্ত স্বচ্ছ ও সততার মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। বডি অন ক্যামেরাটি এক মিনিটের জন্যও যদি বন্ধ থাকে তাহলে আমাদেরকে তার জন্য লিখিত ভাবে জবাবদিহি করতে হয় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে। শুন্য পদগুলোতে দ্রূত জনবল নিয়োগ দিলে মহাসড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।