সই জাল করে নকল চালানের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাব–রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) ইয়াছিন মিয়াকে আট বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে আত্মসাৎ করা ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে তাঁকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লার স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সামছুন্নাহার এই রায় দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ইয়াছিন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তবে পরিবার নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। শহরের তাঁর একাধিক বাড়ি আছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব–রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক ইয়াছিন মিয়া ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত একাধিক সাব–রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর জাল করে ক্যাশ বই, ফি বই, বিভিন্ন রেজিস্ট্রেশন ফি, তল্লাশি ফি ও নকলের ফি বাবদ ৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৫ হাজর ৫৩৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক এইচ এম আখতারুজ্জামান ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর ইয়াছিনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের মামলা করেন। ওই মামলায় তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে মঙ্গলবার ইয়াছিনকে ৮ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ৭৭২ টাকা অর্থদণ্ড করেন কুমিল্লা স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সামছুন্নাহার।
দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুল হক বলেন, ইয়াছিন মিয়া সই জাল করে নকল চালানের মাধ্যমে ৫ কোটি ৩০ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তাই আদালতে তাঁকে ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং আত্মসাৎ করা টাকা ৬০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।