জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তি অর্জনে অভিযুক্ত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বেনজীর আহমেদ গ্রেফতার হওয়া উচিত কিনা, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটার তো প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়ায় দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) তদন্ত করছে। দুদক যদি মামলা করে, পরে আদালত ঠিক করবে-তাকে গ্রেফতার করবে নাকি জেলে পাঠাবে। বিচার ব্যবস্থার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে, সরকার কি আদেশ দেবে?’
শুক্রবার (৩১ মে) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
অনেক গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে বেনজীর সপরিবারে দেশত্যাগ করেছেন, তাকে আগেই গ্রেফতার করা উচিত ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এটা জানি না, এটা এখনও পরিষ্কার না।’
বেনজীর তার ৩২টি ব্যাংক একাউন্ট থেকে ইতিমধ্যে টাকাও তুলে ফেলেছেন বলেও জানা যাচ্ছে-এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এসব বিষয়ে যেহেতু আমি অবহিত নই, এটা আইনের বিষয়। দুদক বলছে, তারা টের পেয়েছেন, তারাই সেটা প্রমাণ করুক।’
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের মতো যারা দুর্নীতিগ্রস্ত আছেন, তাদের তালিকা করবে বিএনপি-এমন এক প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘লিস্ট করলে তো প্রথমে বিএনপি নেতাদের নাম লিখতে হবে। কারণ দুর্নীতি-লুটপাটের শিরোমণি তারা। বিএনপি নেতাদের নাম আগে আসবে। তারপরে অন্য লিস্ট দেখা যাবে।’
দুর্নীতি কেউ করে থাকতে পারে, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, সরকার এখানে নির্বিকার কিনা? সরকার এখানে সৎ সাহস দেখাচ্ছে। দুর্নীতির বিচার হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে। সরকার তো বিএনপির মতো ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স ভোগে নাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স সংস্কৃতিটা গড়ে তোলেন নাই। আমি মন্ত্রী যদি কোনও দুর্নীতি করি, সেটা কি বিনা বিচারে শেষ হয়ে যাবে? প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব খবর আছে, কারা কী করছেন। তিনি সব খবর রাখেন এবং সবার খবর রাখেন। তিনি তার অফিসেরও কিছু লোকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। বিএনপির আমলে এমন কোনও লোককে কি শাস্তি দিয়েছে?’
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সবাইকে কারাগারে রেখে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন, ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আরবিন্দ কেজরিওয়ালের এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘ভারতের নির্বাচনকালে তারা তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য যেসব কথা বলে বা বলবে, আজ যে বক্তব্য তারা দেয়, কেউ দিলে সেটা ভোটের ক্ষতি হচ্ছে মনে করলে তা সংশোধন করেও বলে। নির্বাচনকালীন বক্তব্য নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। আমরা যা আছি, আমরাই। আমরা আমাদের গণতন্ত্র নিয়ে আছি। পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়েও আমাদের গণতন্ত্র চর্চা ঘরেও ভালো, বাইরেও ভালো।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন নাহার ও উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।