৯ জুন মুক্তি। ১০ জুন তুমুল সমালোচনা। ১১ জুন গায়েব। এই হলো আলোচিত কোকা-কোলা বাংলাদেশ-এর বিজ্ঞাপনচিত্রের তিন দিনের টাইমলাইন।
ধরে নেওয়া হচ্ছিল, তিন দিনের আয়ুতে বিজ্ঞাপনচিত্রটি নিয়ে যত আলোচনা-সমালোচনা সব বুঝি এবার ধামাচাপা পড়লো। না। তা আর হলো না। হুবহু বিজ্ঞাপনটিই ফের জীবন্ত হয়ে উঠলো মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যা নাগাদ। কোকা-কোলার ইউটিউব চ্যানেলের পুরনো লিংকেই দেখা যাচ্ছে বিজ্ঞাপনচিত্রটি। যদিও সেখানে বন্ধ রয়েছে মন্তব্যের ঘর। দেওয়া যাচ্ছে না ডিজলাইক। খোলা আছে লাইক দেওয়ার অপশনটি।
তবে কোকা-কোলা বাংলাদেশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপনচিত্রটি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেখা যায়নি। এমনকি এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও ঘোষণা বা প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি।
বলা দরকার, বিজ্ঞাপনচিত্রটি নির্মাণ করেছেন সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন। তিনি নিজেও এর মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সঙ্গে আছেন ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিরিজের আরেক জনপ্রিয় মুখ শিমুল শর্মা।
বিজ্ঞাপনটির নির্মাতা ও প্রধান অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন গতকাল (১০ জুন) রাতেই আত্মপক্ষ সমর্থনে দুঃখ প্রকাশ করেন। স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘এই বিজ্ঞাপনে আমি কোথাও ইসরায়েলের পক্ষ নিইনি এবং কখনোই আমি ইসরায়েলের পক্ষে নই।’
এরপরই বিজ্ঞাপনের অন্য মডেল শিমুল শর্মাও ক্ষমা চাইলেন। মেনে নিলেন দায়! তরুণ অভিনেতা বললেন, ‘পরিচয় দেবার মতো অভিনেতা এখনও হয়ে উঠতে পারিনি, কারণ একজন অভিনেতা হবার জন্য যে অধ্যবসায় এবং দূরদর্শিতা দরকার সেটা এখনও আমার হয়ে ওঠেনি, আমি চেষ্টা করছি মাত্র। তাই হয়তো না বুঝে করা আমার কাজ আজ আমার দর্শক, তথা আমার পরিবার ও দেশের মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। আমি ভবিষ্যতে কোনও কাজে অভিনয় করতে গেলে অবশ্যই আমাদের দেশের মূল্যবোধ, মানবাধিকার, মানুষের মনোভাবকে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে বিবেচনা করে তারপর কাজ করবো। আমি মাত্র আমার জীবনের পথচলা শুরু করেছি, আমার এই পথচলায় ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাকে ভবিষ্যতে একজন বিবেকবান শিল্পী হয়ে ওঠার জন্য শুভ কামনায় রাখবেন।’
বাজারে প্রচলিত রয়েছে, কোকা-কোলা ইসরায়েলের একটি পণ্য। ফিলিস্তিনে হামলা চালানোর দায়ে দেশটির এই পণ্য বয়কটের দাবি তুলেছেন অনেকে। মূলত সেই গুজব কাটিয়ে তোলার লক্ষ্যে কোকা-কোলা বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেন শরাফ আহমেদ জীবনকে দিয়ে। যাতে বোঝানোর চেষ্টা ছিল কোকা-কোলা ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান নয়। এটার ফ্যাক্টরি খোদ ফিলিস্তিনেও রয়েছে। আর বাংলাদেশের কোকা-কোলা দেশেই তৈরি হয়।
বিজ্ঞাপনের শেষ সংলাপটি হলো এমন, ‘একটা চুমুক দেন- তারপর সার্চ দেন’। অর্থাৎ গুজবে কান না দিয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখুন কোকা-কোলা কোন দেশের প্রতিষ্ঠান।
এতে তো কাজ হলোই না, বরং পুরনো বয়কটের দাবি যেন নতুন করে প্রাণ পেলো! যদিও এই দাবি আসলে কারা করছে, ফেসবুকের বাইরে সেটির কোনও প্রাতিষ্ঠানিক বা সাংগঠনিক রূপ দেখা যায়নি এখনও।