বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন
Title :
সুদানের হাসপাতালে আরএসএফের হামলা, নিহত ৪৬০ কারও দাবিতে নয়, ইসি মনে করেছে তাই ‘শাপলা কলি’: সচিব গুম কমিশন হচ্ছে না, দায়িত্ব পালন করবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মহিলা মাদ্রাসার ৭ শিক্ষার্থীসহ আহত ৮ লামায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশু রোহান নিখোঁজ, সন্তানকে খুঁজে পেতে মায়ের আর্তনাদ খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাঁজাসহ যুবক আটক দেবীগঞ্জে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গণজমায়েত ও র‌্যালী আশুগঞ্জ সার কারখানার উৎপাদন চালুর দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি কর্মচারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, ব্রহ্মপুত্র-তিস্তায় ভাঙন শুরু

ওয়ান নিউজ ডেস্ক:
  • Update Time : বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪
  • ২০৫ Time View
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, ব্রহ্মপুত্র-তিস্তায় ভাঙন শুরু
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, ব্রহ্মপুত্র-তিস্তায় ভাঙন শুরু

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার তিন ইউনিয়নের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে তলিয়ে গেছে কয়েকশ’ হেক্টর জমির ফসল। অন্যদিকে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তায় শুরু হয়েছে ভাঙন। বুধবার (১৯ জুন) সকালে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার দিকে ছুটছে। এ অবস্থায় আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

রৌমারীতে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জিঞ্জিরাম, কালোর ও ধরনী নদীর অববাহিকার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি প্রবেশ করায় রৌমারী স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শত শত শ্রমিক। পাহাড়ি ঢলে উপজেলার সদর, যাদুরচর ও চর শৌলমারী ইউনিয়ন আংশিক প্লাবিত হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে।

ব্রহ্মপুত্র ও হলহলিয়া নদীর পানিও বেড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার তিন ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। সড়ক তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও পানির তোড়ে সড়ক ভেঙ্গে মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের কয়েকশ’ হেক্টর জমির ফসল। যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি, লালকুড়া, শ্রীফলগাতি; সদর ইউনিয়নের মাদারটিলা, নতুন চুলিয়ারচরসহ তিন ইউনিয়নের কয়েকশ’ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। অর্ধনিমজ্জিত কিছু জমির ফসল বাড়তি পারিশ্রমিক দিয়ে অনেকে কেটে নিলেও বেশিরভাগ ফসল পানিতে তলিয়ে আছে।

যাদুরচর ইউনিয়নের কর্তিমারী বাজার এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, সরিষা তোলার পর এলাকার অনেকে বোরো ধান রোপণ করেছেন। বিলম্বে লাগানো সেসব ধান পাকলেও তারা ঘরে তুলতে পারেননি। এর মধ্যে ঢলের পানি প্রবেশ করায় পাকা ধান তলিয়ে গেছে। ভুক্তভোগী এই কৃষক বলেন, ‘২৫ শতক জমিতে ধান চাষ করছি। হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে ধানক্ষেত তলায় গেছে। আইজ ১ হাজার টাকা মজুরিতে ১০ জন শ্রমিক নিছি। তারা পানিতে ডুইবা ডুইবা ৫ শতক জমির ধান কাটতে পারলেও বাকি ধান পানিতেই রয়া গেছে।’

উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইজলামারি গ্রামের বাসিন্দা শাহিন ইকবাল জানান, ‘আমরা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছি। আশপাশের ১৩টি গ্রামে ফসল ও গোখাদ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঢলের পানির স্রোতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে, অনেক জায়গায় সড়ক ভেঙে গেছে।’

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘তিন ইউনিয়নের আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত মানুষদের জন্য ৬ মেট্রিকটন চাল উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা বিতরণ চলমান রয়েছে।’

চর রাজিবপুর উপজেলার বর্ডার হাটে পানি ঢুকেছে। একই সঙ্গে উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের কীর্তনতারি, নাওসালা, শিকারপুরসহ কয়েকটি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বসতভিটা হারাচ্ছেন একের পর এক পরিবার। গত এক সপ্তাহে অন্তত ১০টি পরিবারের ভিটেমাটি নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকা অবহেলিত। চরের মানুষের আর্তনাদ, দুর্দশা কেউ দেখে না। একটু বস্তা ফেললে আমাদের উপকার হইতো। আমার নিজের বাড়িও ১২ বার ভাঙছে। এটা যে কত কষ্টের তা যার ভাঙছে শুধু সেই বুঝবে। অন্যরা বুঝবে না। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের এলাকার মানুষের পাশে যেন দাঁড়ায়।’

রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে একের পর এক বসতভিটা। সেখানে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজার ও শতাধিক পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে সময় বিশেষে ওঠানামা করে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বুধবার দুপুরের পর দুধকুমারের পানি কিছুটা কমে সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পাউবো।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 onenewsbd24.com
Developed by: FAZLY RABBY
Tuhin