সৌদি আরবে তীব্র তাপপ্রবাহে এ বছর পবিত্র হজ পালনের সময় এক হাজার ৮১ হাজির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বার্তা সংস্থা এএফপি এই পরিসংখ্যান দিয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মিসরের হজযাত্রী। আর এই হাজিদের অর্ধেকের বেশিই ছিলেন অনিবন্ধিত।
এখন পর্যন্ত ১০ দেশের এক হাজার ৮১ জন হাজির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নিজ নিজ দেশের হাজিদের খোঁজখবর নেওয়ার দায়িত্বে থাকা কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মৃতের এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মিসরের আরও ৫৮ হাজির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এক আরব কূটনীতিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হজে মারা যাওয়া ৬৫৮ মিসরীয়র মধ্যে ৬৩০ জনই ছিলেন অনিবন্ধিত।
ইসলামি চান্দ্রবর্ষের হিসাব অনুযায়ী হজের সময় নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী, এ বছর হজের সময় সৌদি আরবে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।
দেশটির জাতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মক্কার মসজিদুল হারামে তাপমাত্রা ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ওই এলাকায় প্রতি দশকে তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বাড়ছে বলে গত মাসে সৌদি আরবের একটি গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়া প্রতিবছর হাজারো হজযাত্রী সরকারি ব্যয় বহন করতে না পারায় অবৈধভাবে হজ করতে যান। এ বছর কয়েক হাজার এরকম অনিবন্ধিত হজযাত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তারপরও আরও কয়েক হাজার অনিবন্ধিত হজযাত্রী হজ করেছেন। আর তারাই এই গরমে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিলেন। কারণ সৌদি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারেন নি তারা। ফলে প্রচণ্ড রোদ আর তীব্র গরমের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটা বা হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন তারা, জানিয়েছেন আরব ওই কূটনীতিক।
মিসরীয় হজযাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণও তীব্র তাপ থেকে সৃষ্ট উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য জটিলতা।
এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার অন্তত ১৮৩ হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মালয়েশিয়া, ভারত, জর্ডান, ইরান, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, সুদান এবং ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলও তাদের হজযাত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ কারণ উল্লেখ করেনি।
এর আগে গত রবিবার সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তাপজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অন্তত ২৭০০ হাজি।