কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় আহতদের কর্মসংস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আহতদের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার করে যাচ্ছে এবং করবে। চিকিৎসা শেষে তাদের অন্তত আয়-রুজির ব্যবস্থা যাতে হয়, সেটাও আমরা করবো।’
শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকালে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় আহতদের খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি। এখানে দলমত-নির্বিশেষে সবার জন্য আমি কাজ করি। আমি যা করি সব মানুষের জন্য করি। কে আমাকে সমর্থন করে, কে করে না, আমি সেটা চিন্তা করি না। কারণ আমি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করেছে তাদের সেবা করতে। সেভাবেই আমি সেবা করি।’
বর্বরতার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে এইটুকু বলবো যে যারা অপরাধী, তাদের খুঁজে বের করে দিতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এই বর্বরতার বিরুদ্ধে; এই ধরনের জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে। যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করে, তাদের কোথায় কে আছে খুঁজে বের করা। তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া, যেন আর কখনও এ দেশের মানুষের জীবন নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যেটা আমি কখনও চাইনি। কখনোই চাইনি এভাবে মানুষ আপনজন হারাবে, এভাবে মৃত্যুর মিছিল হবে। আজ বাংলাদেশে সেটাই করলো।’
তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, এতে অর্জনটা কী হলো? কতগুলো মানুষের জীবন চলে গেলো। কতগুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো।’ তিনি বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার করে যাচ্ছে এবং করবে। চিকিৎসা শেষে তাদের অন্তত আয়-রুজির ব্যবস্থা যাতে হয়, সেটাও আমরা করবো।’
নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক অবস্থা, আজ এতগুলো মানুষ আহত-নিহত হলো। আমি তো আমার সব হারিয়েছি— বাবা-মা, ভাই— সব হারিয়েছি, আমি তো জানি মানুষের হারানোর বেদনা কী? আমার চেয়ে বোধ হয় আর কেউ বেশি জানে না।’
বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই জামায়াত-শিবির, বিএনপি, ছাত্রদল, তারাই এই সুযোগটা নিয়ে, কোটা আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে দেশব্যাপী এই ধ্বংসাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ববোধ নেই, দেশের প্রতি কোনও মায়া-মমতা নেই, দেশের প্রতি কোনও দায়িত্ববোধ নেই। আর মানুষকে এরা মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না।’
দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশবাসীকে বলবো, আপনারা দোয়া করেন যেন এই জঙ্গিবাদ ও জুলুমের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পায়; মানুষের জীবনে শান্তি আসে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।