ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা হিজবুল্লাহকে আঘাত করতে চান কিন্তু লেবাননের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে না যাওয়ার পক্ষে। সোমবার (২৯ জুলাই) তারা এই মন্তব্য করেছেন। গোলান মালভূমিতে শনিবারের রকেট হামলার পর প্রতিশোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় ১২ শিশু ও কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শনিবারের রকেট হামলার পর কয়েক দিনের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এসব কথা বলেছেন। তারা ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেননি।
একটি কূটনৈতিক সূত্রের মতে, পাল্টা আঘাত বড় ধরনের যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাবে না। এ মুহূর্তে এটি আমাদের স্বার্থের পক্ষে নয়।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের হিজবুল্লাহকে এই হামলার জন্য দায়ী করেছে। যদিও হিজবুল্লাহ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ ঘটনার ফলে ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত লেবাননের এই গোষ্ঠীর মধ্যে সীমান্তসংলগ্ন সংঘাত আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রবিবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে পাল্টা হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। ইসরায়েলের ইয়েদিওথ আহরনোথ পত্রিকা জানিয়েছে, প্রতিশোধ ‘সীমিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ’ হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বন্দরগুলোতে সীমিত হামলা অথবা হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগার ও কমান্ডারদের লক্ষ্যবস্তু করা।
গাজা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত ২০০৬ সালের পর সবচেয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে। হিজবুল্লাহ বলেছে, তাদের রকেট ও ড্রোন আক্রমণগুলো ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে চালানো হচ্ছে। তারা গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হামলায় কোনও বিরতি দেবে না।
লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে সংঘাতের ফলে উভয়পক্ষের হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজোগের সঙ্গে ফোনালাপে সংঘাত থেকে উত্তরণে গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
সোমবার ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় দক্ষিণ লেবাননে দুই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হন। শনিবারের ঘটনার পর এটি লেবাননে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। হামলায় তিন জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে এক শিশু রয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সোমবার একটি ড্রোন গালিলি পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল। যা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইটগুলো বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ অক্টোবর থেকে পাল্টাপাল্টি হামলায় লিপ্ত রয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে প্রায় ৩৫০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা এবং শতাধিক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবারের হামলার পর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর আক্রমণে নিহত বেসামরিক ব্যক্তির সংখ্যা ২৩-এ পৌঁছেছে। পাশাপাশি অন্তত ১৭ সেনা সদস্যও নিহত হয়েছেন।