সরকার পদত্যাগের একদফা দাবিতে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে মেহেরপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি, ছাত্রদল ও ছাত্ররা। রবিবার (৪ আগষ্ট) সকাল ১১টার দিকে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মোড়ে একত্রিত হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও কলেজ মোড়ে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় সরকার পতনের দাবীতে আন্দোলনকারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরেসহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে শোনা গেছে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, সোনার বাংলায় বৈষম্যের কোন ঠাই হবে না। আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের উপর হামলা, গুলি, টিয়ারসেল মারা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য ভাই, সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছে। এখন আমরা এক দফা দাবি সরকারের পদত্যাগ চাই। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আমাদের আন্দোলন চলবে। দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী ঘিরে এসময় শহরের ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আতংকে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারি কলেজ মোড়ের সামনে থেকে ছাত্রদলের একটি মিছিল শুরু হয়। পরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্দোলনকারীরা কলেজ মোড়ে একত্রিত হয়ে মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও কলেজ মোড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে আন্দোলনকারীরা আবারও মিছিল নিয়ে শহরের দিকে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পরেই আন্দোলনকারীদের মিছিলের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা কলেজ মোড়ে একত্রিত হতে শুরু করে। পরে কলেজ মোড় থেকে একটি মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি শহরের প্রবেশের সময় শহরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পাশে এক ব্যক্তিকে মারধর করার ভিডিও ধারণ করার সময় প্রথম আলোর মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু সাঈদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে নামধারী কিছু ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়। আবু সাঈদকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর আগে আন্দোলনকারী সন্দেহে আল মাহাবুব মুন্না নামের একজনকে পিটিয়ে আহত করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলের ছবি নিতে গেলে যুগান্তরের মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল আযমের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। পরে মোবাইল ফোনটি দিয়ে দেন তারা।
দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি মিছিল চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। দু’পক্ষই তাদের অবস্থান কর্মসূচী ও মিছিল বন্ধ করে দেয়। বিকাল ৩টা থেকে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। দু’পক্ষের কর্মসূচীকে ঘিরে সকাল থেকেই পুলিশ, ডিবি ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। কোন পক্ষের সাথেই তারা কোন এ্যাকশনে যায়নি।