সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন
Title :
আলমডাঙ্গায় গণঅধিকার পরিষদের আঞ্চলিক অফিস ভাংচুর তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবে-পঞ্চগড়ে বিএনপির নেতা দুদু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাকরি স্থায়ী করণের দাবিতে গ্যাসফিল্ডে কর্মরত নৈমিত্তিক শ্রমিকদের অবস্থান ধর্মঘট নিখোঁজের একদিন পর গাংনীতে ভ্যানচালকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর ভাই মৃদুলের জেল জরিমানা যথাযোগ্য মর্যাদায় মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাষা শহীদদের প্রতি সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে আটক-৩ তিনদিনের রিমান্ড শেষে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর স্ত্রী মোনালিসাকে কারাগারে প্রেরণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় গ্যাসের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • Update Time : বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০২৪
  • ১১৪ Time View
মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভাংচুর
মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভাংচুর

স্বাধীনতার সুতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা (বর্তমান মুজিবনগর) বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। আর সেই ইতিহাসকে জীবন্ত রাখতে নির্মাণ করা হয়েছে শত শত ভাস্কর্য ও ম্যুরাল। যা দিয়ে যে কারো চোখের সামনে ধরা দিতো পুরো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। কোন দলের নয়, আপামর জনতার ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ইতিহাস বহন করা এই শত শত ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে।

মুজিবনগরে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য সমস্ত ঘটনাবলীর ইতিহাসের ভাস্কর্য ও ম্যুরাল করে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল স্মৃতি মানচিত্র ও কমপ্লেক্স। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধ হঠাৎ করে আবির্ভূত হয়নি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ আন্দোলন ও অতল ত্যাগের ইতিহাস।

মুজিবনগর আম্রকাননের যে স্থানটিতে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা ও শপথ গ্রহণ হয় সেই স্থানে ১৯৮৭ সালে গড়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ। যা বর্তমানে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ নামে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিশেষভাবে পরিচিত। বাংলাদেশের ইতিহাস খুঁজতে সারা বছর মুজিবনগরে লোক সমাগম হয়ে থাকে। অনেকে দেখতে আসেন, অনেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে আসেন।

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীনতা সূর্য অস্ত যায়। এর প্রায় ২১৪ বছর পর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আবার সেই তৎকালীন প্রাচীন ভারতের নদীয়া জেলার আর এক অংশে বর্তমানে মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননে স্বগর্বে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য। এরপর ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালী স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ লাভ করেন। এরপর স্বাক্ষী হিসেবে স্বাধীন বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধরে রাখতে গড়ে তোলা হয় মুজিবনগর স্মৃতিকমপ্লেক্স।

কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্বাক্ষী ও ইতিহাসকে মুছে দিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য সমস্ত ঘটনাবলীর ভাস্কর্য ভেঙ্গে তছনছ করা হয়েছে। লুট করা হয়েছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় মানুষ নেমে পড়ে। পরে একের এক মিছিল আনন্দ মিছিল বের করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। মিছিল থেকেই শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও বিভিন্ন দোকানে লুটপাটের ঘটনা। এ থেকে বাদ পড়েনি স্বাধীনতার সূতিকাগার মুজিবনগরও। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সমস্ত স্মৃতি চিহ্নগুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষনের ভাষ্কর্য, ১৯৭১ সালে বর্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নারী নির্যাতন ও হত্যা, দেশের প্রথম সরকারকে গার্ড অব অনার, পাক বাহিনীর আত্মসমর্পন, রাজাকারদের সহযোগিতায় বাঙ্গালী নারী-পুরুষের উপর পাক বাহিনীর নির্যাতন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী, কর্ণেল ওসমানীসহ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্কর্যসহ ঐতিহাসিক মুজিবনগরের স্মৃতিকে চির অম্লান করে রাখতে নির্মিত মানচিত্রে থাকা ১১টি সেক্টরের কোন এলাকায় কিভাবে যুদ্ধ হয়েছে, শরনার্থীরা কিভাবে ভারতে গিয়েছিলেন সমস্ত ম্যুরাল ভেঙ্গে তছনছ করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে।

এই জঘন্য তান্ডবের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে। তারা বলেন দল-মত থাকতেই পারে কিন্ত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে দূরে রাখতে এই জঘন্য ভাংচুরের নিন্দা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। এছাড়াও দেশ জুড়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট বন্ধের দাবীও জানিয়েছেন তারা।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 onenewsbd24.com
Developed by: FAZLY RABBY
Tuhin