মেহেরপুরে সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসাসহ ১৬৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে মামলার বাদী সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী হাসনাত জামান আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলাটি প্রত্যাহার করেন।
মামলার বাদী হাসনাত জামান বলেন, আন্দোলন চলাকালে গত ৪ তারিখে ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাকে মারধর করেছিলো। আমাকে যারা মারধর করেছিলো তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি কিন্তু আমাকে না জানিয়ে বা ভূলবশত যে কোন ভাবে আমাকে বাদী করে এতজনের বিরুদ্ধে মামলাটা করা হয়েছে। পরে আমি মামলার তালিকা দেখার পরে বুঝতে পারি এখানে অনেক নির্দোষ যারা কোনভাবে এই ঘটনার সাথে জড়িত নয় এমন অনেক জনকে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে ১৬৬ জনকে আসামী করা হয়েছিলো কিন্তু আমি খেয়াল করে দেখছি যারা অপরাধী আমাকে মেরেছিল তারা অনেকেই এখানে নেই। তাই আমি স্বজ্ঞানে, সেচ্ছায় মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমি মামলার বাদী হলেও মামলার তালিকা সম্পর্কে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। যখন আমার স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিলো তখন আমাকে বলা হয়েছিলো আমি মার খেয়েছি সেজন্য আমার স্বাক্ষরটা লাগবে। যখন আমাকে মামলার তালিকা দেখানো হয়েছিল তখন যারা আমাকে মেরেছিল তাদের কয়েকজনের নাম ছিলো। মামলা হওয়ার পর তালিকা দেখে আমি দেখলাম এখানে অনেক নির্দোষ নিরাপরাধ মানুষ যাদের অনেককে আমি চিনিই না তাদের জড়ানো হয়েছে। যারা স্বাক্ষী আছে তারাও বেশিরভাগ নাম জানে না।
মামলার ৩ নম্বর স্বাক্ষী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমাদের উপর যারা হামলা করেছিল আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলার পদক্ষেপ নেয়। মামলাটি সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ১/২০২৪। পরবর্তীতে মামলার তালিকা থেকে আমরা দেখি তালিকায় অনেক মানুষ আছে যারা মারা গেছে, চাকুরিজীবী আছে অনেকে বিদেশে আছে তাদের নামও যুক্ত করা হয়েছে। তারা তো নিরাপরাধ তাদের নামে কেন মামলা হবে। যেহেতু আমরা কোন নির্দোষকে শাস্তি দিতে চাই না, আমরা কোন অন্যায় স্বাক্ষী দিতে চাইনা। তাই আমরা সকল স্বাক্ষীরা বাদীর সাথে আলোচনা করে স্বেচ্ছায় মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার মেহেরপুর সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসাসহ ১৬৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলে সদর থানায় মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক মো: মঞ্জুরুল ইমাম।