উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করছে
৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বৈশম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পঞ্চগড়ের ৩ উপজেলার ৫ জনের পরিবারে এখনো চলছে মাতম। তাদের পরিবার চলছে মানবেতর ভাবে।
পরিবারের একমাত্র উপার্জন ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ টিকে হারিয়ে না খেয়ে চলছে তাদের দিনরাত। স্ত্রী, সন্তানেরা পাচ্ছে না তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস।
৫ জন শহীদের একজন হলেন শাহাবুল ইসলাম শাওন। ৩ ভাই আর ১ বোনের মধ্যে শাওন তৃতীয়।
শাহাবুল ইসলাম শাওনের বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের কাদেরের মোড়ের মেলাপাড়া এলাকায় । সে গাজীপুর জেলার বাইপাইল এলাকায় কাচামালের ব্যবসা করতো। ৪ আগষ্ট পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় শাওনের বাবা মা আর স্ত্রীর সাথে।
শাওনের মা তাছলিমা বেগম জানান, আমরা খবর পাই ৪ তারিখে বিকেলে তার গুলি লেগেছে। তারপরে ছেলের লাশ আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে অনেক খোজাখুজি করে লাশের সন্ধান পাই রাতে।
শাওনের স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, অভাবের সংসারে দিন ভালো যাচ্ছিল না। বাসা ভাড়া, নিজেদের খরচ আর গ্রামের বাড়ির শ্বশুর শ্বাশুড়ির খরচ দিতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। যার কারনে শাওনের কাচামালের ব্যবসার পাশাপাশি আমি গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করি। অফিসের ভিতরে থেকে আমি খবর পাই আমার স্বামী শাওনকে গুলি করা হয়েছে। পরে অফিস হতে বের হয়ে লাশ অনেক খোজাখুজি করি। বিভিন্ন জায়গায় খোজ খবর নিয়ে দেখি লাশ ইসলমপুর হাসপাতালে। পরে ওই হাসপাতাল থেকে ৫ দিন পরে আমাদের কে লাশ দেয়া হয়।
৭ বছর আগে বিয়ে করা শাওনের আড়াই বছরের এক ছেলে রয়েছে। সেই অবুঝ ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করতেছে শাওনের স্ত্রী শারমিন আক্তার।
শাওনের বাবা আজাহার আলী জানান, আমার তিন ছেলের সবাই আলাদা ভাবে চলে। আমাদের বাড়ি ভিটা ছাড়া কোন জায়গা জমা নাই। শাওন মারা যাওয়ার পর এখন তার স্ত্রী ছোট বাচ্চাকে নিয়ে আমার বাড়িতেই থাকছে। নিজেরাই দিনমুজুর করে চলি। এখন নাতি আর বৌমাকে কিভাবে চালাবো। সরকার থেকে কিছু সহযোগিতা পেলে হয়তো তারা ভালো ভাবে চলতে পারবে।