মেহেরপুরে টানা ৪ দিনের বৃষ্টি আর মাঝারি ঝড়ে জনজিবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। মাঠের উঠতি ফসল আউশ ধান এবং সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। অবিরত বৃষ্টির কারণে শহরের অনেক স্থানেই জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে। জীবিকার তাগিদে বাড়ির বাহিরে বের হওয়া লোকজন পড়েছে চরম বিপাকে। এদিকে জেলায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য মাঠে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
মেহেরপুরে শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি আর মাঝারি ঝড়। সোমবার বিকেল পর্যন্ত একইভাবে তা অব্যাহত রয়েছে। এ অঞ্চলে রবিবার সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী ৭৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার জমির ফসল।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে মরিচ ক্ষেত, পটল ও মুলা ক্ষেত। আউস মৌসুমের ধান কাটতে যাদের বাকি ছিল তারাও পড়েছেন চরম বিপাকে। এছাড়াও নিচু এলাকার আমন ধান তলিয়ে গেছে পানির নিচে। অনেক পুকুর, বিল তলিয়ে গেছে। দীর্ঘ কয়েক বছর অনাবৃষ্টির এই জেলায় আকস্মিক প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
যুগিন্দা গ্রামের রুবেল জানান, তিনি এবছর জমিতে মরিচ লাগিয়েছিলেন। কয়দিনের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে সব। এতে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন তিনি। ধানখোলা গ্রামের মরিচ চাষি জহির আলী জানান, থেমে থেমে বৃষ্টি হলেই মরিচ ক্ষেতের সমস্যা হয়। এখন বৃষ্টির সাথে সাথে ঝড়ো বাতাসের কারনে গাছের গোড়া নড়ে গাছ মরে যাবে।
ধানখোলা গ্রামের কামাল হোসেন জানান, কয়দিনের টানা বর্ষণে আমার তিনটি পুকুরের মাস ভেসে গেছে। মনিরুল ইসলাম জানান, জাবাখালের এক একর জমির পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। বেশ বড় হয়েছিল মাছগুলো। বৃষ্টির পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে। একই কথা জানালেন জোড়পুকুরের খোকন ও নোনার বিলের মৎস্য চাষি আনোয়ার হোসেন। আনোয়ার হোসেনের ১০ বিঘা জমিতে মাছের ঘের রয়েছে। অন্ততঃ ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ কাজ করছে। কোন মাঠে কার কতটু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করা হচ্ছে। এমুহূর্তে সঠিক তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। বঙ্গোপসাগরের গভীর স্থল নিম্নচাপ এবং মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মেহেরপুর জেলাসহ খুলনা বিভাগের সব জেলায় বৃষ্টিপাত ও ঝড় হচ্ছে বলে জানান তিনি।