পঞ্চগড়ে দীর্ঘ দেড়যুগ পর প্রকাশ্যে কর্মী সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে সাত শতাধিক কর্মী নিয়ে এই সমাবেশ করেন ছাত্র সংগঠনটি।এর আগে পঞ্চগড়ে সর্বশেষ ২০০৬ সালে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রকাশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছিলো।
কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার শিক্ষাব্যবস্থায় কর্মমুখী ও নৈতিকতার মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা বাদ দিয়ে ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে ওঠে পড়ে লেগেছিলো। যেই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে চাকরির জন্য আরো ৫-৭ বছর পড়াশোনা করতে হয়, এটা কর্মমুখী শিক্ষা নয়। এই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, বুয়েট ক্যাম্পাসে আবরার ফাহাদের মত মেধাবী ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করে হত্যা করা হয়েছে। এই সন্ত্রাস কারা এবং কোন আদর্শ থেকে তৈরি হয়েছে? ইসলাম বাস্তবায়ন হলে এই সমাজ থেকে এসব সন্ত্রাস, গুম, খুন, ধর্ষণ দুর হয়ে যাবে। বিগত সরকার এটা কখনোই চায়নি। কারণ তাদের রাজনীতিই এমন।
নুরুল ইসলাম বলেন, ভৌগলিক দিক থেকে এ দেশের কিছু প্রতিকূলতা রয়েছে। আমাদের চারদিকে ভারত, মাঝে মাঝে তারা হুমকি দেয় দখলে নিবে। আমরা ১৯৪৭ সালের ভারতবর্ষের ইতিহাস জানি। যতগুলো দেশে স্বাধীনতা চেয়েছিলো ভারত তাদের পরাধীন করে রেখেছিলো। বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ভাগ না হয়ে ভারতের সঙ্গে থাকলে কখনই স্বাধীন হতোনা। হায়দ্রাবাদ মুসলমানদের নগরী ছিলো, এই হায়দ্রাবাদকে ভারত মাত্র একবছরের ব্যবধানে কেড়ে নিয়েছিলো। তারা সিকিমকে দখল করে নিয়েছে, কাশ্মীরে মুসলমানদেরকে অবর্ননীয় নির্যাতন করে দখলে নিয়েছে। ভারতের কাছ থেকে আমাদের গণতন্ত্র শেখার দরকার নাই, আমরা নিজেরাই অনেক সুন্দর একটি সম্প্রীতির দেশ গড়তে পারবো।
তিনি আরো বলেন, বিগত পুতুল সরকার ভারতের মদদপুষ্ট হয়ে টানা ১৫ বছর ধরে এ দেশের অগ্রগতিকে নানাভাবে বাধাগ্রস্থ করেছে। ভারত আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা দেয়নি। তাদের প্রয়োজনে বাধ দিয়েছে। কিছুদিন আগেও বাধ ছেড়ে দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃত্রিম বণ্যা সৃষ্টি করেছে। ভারত তাদের স্বার্থে সব করতে পারে। এই সরকারের মাধ্যমে ভারত আমাদের ওপর দাসত্বের গোলামী আবার চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলে। আমাদের দাস শ্রেণিতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। আজকে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে সেই স্বৈরশাসক দেশ ছেড়েছে।
ছাত্রশিবিরের পঞ্চগড় জেলা সভাপতি জুলফিকার রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শিবিরের কেন্দ্রীয় পাঠাগার সম্পাদক অহিদুল ইসলাম আকিক, জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন, জেলা জামায়াতের বাইতুলমাল সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি জয়নাল আবেদীন, কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা তোফায়েল প্রধান, নূর-ই-আলম সালেহী, বেলাল হোসেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিবির নেতা ব্যারিষ্টার মাহমুদ আল মামুন হিমু প্রমূখ।