মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা গ্রামের এইচএমএইচভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম খান ও তার ভাই সহকারী শিক্ষক (বাংলা) সামসুল হকের পদত্যাগ ও শাস্তির দাবীতে ফুসে উঠেছেন অভিভাবকবৃন্দসহ এলাকাবাসি। বৃহষ্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয়রা বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে তাদের শাস্তির দাবী তোলেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।
স্থানীয়রাসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ের ওই বাংলা শিক্ষক সামসুল হক অষ্টম শ্রেণির ক্লাস চলাকালীণ সময়ে তিন ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করেন। বিষয়টি ওই ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের একজন ম্যাডামকে অবহিত করেন এবং বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদেরকে জানান। সেই সাথে তারা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয়। অভিভাবকরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম খানকে জানান। সেই সাথে অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ ও শাস্তির দাবী তুলে বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করেন।
গত বুধবার পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম খান ওই শিক্ষকের কোন বিচার না করায় বৃহষ্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে অবস্থান নেয় ও অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার প্রশ্রয়দানকারী প্রধান শিক্ষককে অপসারণ ও শাস্তির দাবী তোলে। এসময় কৌশলে পালিয়ে যান অভিযুক্ত শিক্ষক সামসুল হক। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম খান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই করে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করেন। সেই সাথে অভিযুক্তদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ও প্রধান শিক্ষককে শিক্ষা অফিসে নিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, অভিযুক্ত বাংলা শিক্ষক সামসুল হক প্রধান শিক্ষকের ভাই। ইতোপূর্বে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ তাকে বহিষ্কার করে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে আবারও সামসুল হককে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম খান জানান, ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে যৌন হয়রাণীর ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি? সে ব্যাপারে তিনি কোন জবাব দিতে পারেন নি।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।