পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় চিহ্নিত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাতিলসহ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলার বিজয়ী চত্বরে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানির কমান্ডার এ সাংবাদিক সম্মেলনে আয়োজন করে। সাংবাদিক সম্মেলনে দেবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার একে ভুইয়া বক্তব্য দেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭৬ সালে দেবীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ছিল মাত্র সাতজন। তখন আমরা পুরো থানাতে মুক্তিযোদ্ধা খুজে পাইনি। এরপর থেকে আমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম থেকে সরে গিয়েছি। এরপরে অনিল চন্দ্র ৩০ বছরে একক ভাবে স্বদেশ চন্দ্র রায়কে সাথে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনা করে।
তখন আমরা দেখতে পেলাম ৩ জনকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও ২ জন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকা ভুক্ত করে। এই ৫ জন মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে নাই। আমি ৩ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে মন্ত্রী তাদের ভাতা বাতিল করে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। স্বদেশ চন্দ্র রায় তার দলবল নিয়ে অর্থের বিনিময়ে পুনরায় ৩ জনকে তালিকাভুক্ত করে। তাদের মধ্যে অক্ষয় চন্দ্র রায় নামের একজন ১৯৭৪ সালে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে মারা যান।
তিনি আরও বলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ১০৩ জন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাচ্ছেন ১শ ৪১ জন মুক্তিযোদ্ধা। বাকি ৩৮ জন মুক্তিযোদ্ধা ২০০৫ সালেও তারা গেজেট ভুক্ত হতে পারেনি। এই ৩৮ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা অর্থের বিনিময়ে অনলাইনে নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ভুয়া হওয়ার কারনে তারা আজ পর্যন্ত গেজেট ভুক্ত হতে পারেনি। ভুয়া হয়েও তারা সরকারি ভাতা, বোনাস নিচ্ছেন এবং সরকারি সব সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন এবং ছেলে মেয়েদের সরকারি চাকুরি নিয়ে দিচ্ছেন।
সাবেক কমান্ডার এ কে ভুইয়া আরও বলেন, স্বদেশ চন্দ্র রায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার থাকাকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ১০ লক্ষ টাকা ঋন নিয়ে দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকেও তিনি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্ব থাকা কালেও এবং দায়িত্বে না থেকেও তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়েছেন। দেবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানী কমান্ডার একে ভুইয়া সাংবাদিক সম্মেলনে মুল বক্তব্য উপাস্থাপনা করেন। এসময় দেবীগঞ্জ উপজেলার জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আবুল বাশার বসুনিয়া, লুৎফর রহমানসহ সকল মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।