২০০৭ সালের কাফরুল থানার একটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে দেওয়া আদালতের দণ্ডাদেশ স্থগিত করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লার সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডা. জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিতের বিষয়ে দাখিল করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের মতামতের আলোকে The Code of Criminal Procedure, (Act No. V of 1898)-এর ধারা ৪০১(১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আদালতে আত্মসমর্পণ করে আপিল দায়েরের শর্তে এক বছরের জন্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সাজা স্থগিত করা হলো।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হুদা রাজধানীর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক রহমানকে তার স্ত্রী ও কন্যার নামে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের জন্য ২০০৭ সালের ২৯ মে দুদক নোটিশ দেয়। ২০০৭ সালের এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেওয়া নোটিশের পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তারেক রহমান ২০০৭ সালের ৭ জুন তার সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করেন। এরপর দুদক অনুসন্ধান করে জানতে পারে, তারেক রহমান সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৮ হাজার ৫৬১ টাকা ৩৭ পয়সার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এছাড়া তারেকের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু পরস্পর যোগসাজশে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকা ৩৭ পয়সা জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
তদন্ত শেষ করে জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, তারেক রহমান ২ কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন, যার সবই জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ। ওই সম্পদসহ মোট ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়া ডা. জোবাইদা ও ইকবাল মান্দ বানু তারেক রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তিকে নিজেদের অর্জিত বলে প্রমাণের চেষ্টা করে তারেক রহমানকে সহযোগিতা করেছেন।
২০২৩ সালে ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের দেওয়া রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর ও জোবাইদা রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সঙ্গে জরিমানাও করা হয়।