সোনালী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ও দুই আনসার সদস্যকে কুপিয়ে এবং গুলি চালিয়ে টাকার ব্যাগ লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। ব্যাগের ভেতরে ৭ লাখ ৮ হাজার ৩৭৪ টাকা ছিল।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর সদরের স্টেডিয়ামের কাছাকাছি সড়কে এই ঘটনা ঘটে। আহত চারজনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুর সদরের সোনালী ব্যাংকের সহকারী ব্যবস্থাপক (এজিএম) গাজী শহিদুজ্জামান জানান, রোববার বিকেল ৫টার দিকে গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেলের সোনালী ব্যাংকের উপশাখা থেকে ‘ক্যাশ ক্লোজ’ করে টাকা নিয়ে মূল শাখায় আসছিলেন দুই কর্মকর্তা। সঙ্গে ছিলেন দুই আনসার সদস্য। সোনালী ব্যাংকের গাজীপুর সদরের মূল শাখা কোর্ট ভবনে। ছয়টি মোটরসাইকেলে ১২ দুর্বৃত্ত আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্র দেখিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের গাড়ির গতিরোধ করে। এর পর টাকা ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করে। এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে উপশাখার ইনচার্জ আতিকা বেগম, ক্যাশ অফিসার ফারজানা শিমুসহ চারজনকে আহত করে। আতিকার বাঁ হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ঘাড় ও মাথায় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ফারজানার ডান হাত জখম হয়। আশপাশে ভয় ছড়াতে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। একজন আনসার সদস্যের হাতে গুলি লাগে। এর পর টাকা ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের কয়েকজন হেলমেট পরিহিত ও অন্যদের মুখে মাস্ক ছিল।
গাজী শহিদুজ্জামান আরও জানান, মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভাড়া করা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ব্যাংকের টাকা বহন করা হচ্ছিল। উপশাখার গাড়িচালক সম্প্রতি অবসরে গেছেন।
ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা জানান, যখন হামলার হয়, তখন আশপাশে অনেক লোকজন ছিল। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা তাদের মিশন শেষ করে। এর পর মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাংকের টাকা বহনের কাজে যুক্ত আনসার সদস্যদের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। পোশাক পরিহিত অবস্থায় নিরস্ত্রভাবে তারা দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গাজীপুর সদর থানার ওসি রাহেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা চলছে। একাধিক টিম তদন্ত শুরু করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ছয়টি মোটরসাইকেলে অস্ত্রসহ দুর্বৃত্তদের গতিবিধি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পূর্বপরিকল্পিত। রেকি করার পর তারা ব্যাংকের টাকা লুট করেছে। টাকা বহনের নিরাপত্তা ত্রুটির বিষয়টি দুর্বৃত্তরা জানত।