এক কোটি ৮০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভাই মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ঠিকাদার শহীদ শরফরাজ হোসেন মৃদুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এক কোটি ৮০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কবির হাসান এই আদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খ ম ইমতিয়াজ বিন হারুন জুয়েল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে শহীদ সরফরাজ হোসেন মৃদুলের সঙ্গে যৌথভাবে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন দেবাশীষ। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গণপূর্ত, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রকৌশলী, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টা নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ করে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ থেকে ২৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের প্রথম দিকে যৌথ ঠিকাদারি ব্যবসা পরিসমাপ্তি ঘটালে তার সঙ্গে মূলধন ও লভ্যাংশসহ আনুমানিক দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি পাওনা হয়। প্রাপ্য টাকা না পেয়ে তার পরিবারের লোকজনসহ জেলা যুবলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে অবহিত করে। এক সময় সবার হস্তক্ষেপে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ব্যবসায়িক হিসাব করতে রাজি হয়। পরবর্তীতে হিসাবে বসতে বললে বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করে একপর্যায়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে তখন সে মৌখিকভাবে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা দেবার প্রতিশ্রæতি দিয়ে মীমাংসা করে। এবং ২০২৩ জুলাই মাসের ১৬ তারিখে ঢাকায় যেতে বলে। ঢাকার আদাবরে তার বাসার সামনে গেলে রিংরোড সাহাবুদ্দিন প্লাজার ওসিস কফিশপে বসে ২৪ জুলাই ২০২৩ তারিখ দিয়ে রূপালি ব্যাংক মেহেরপুর শাখার এক কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করে।
চেকে দেওয়া তারিখ অনুযায়ী টাকা উত্তোলনের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে চেক জমা করা হয়। এক সপ্তাহ পর ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅনার দেখিয়ে সার্টিফিকেট প্রদান করে। যেখানে লেখা আছে, গত ৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। ১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে ব্যাংক চেক ডিজাঅনার সার্টিফিকেট দেয়। বিষয়টি শহীদ সরফরাজ হোসেন মৃদুলের জানালে সে আজকাল করে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াতে থাকে। অতঃপর বিজ্ঞ এ্যাডভোকেটের মাধ্যমে ৩০ আগস্ট ২০২৩ সালে তার বরাবর এন আই এক্ট ১৮৮১ এর বিধান মতে ডাকযোগে নোটিশ প্রদান করিয়া চেকে উল্লেখিত ১,৮০,০০,০০০/- (এক কোটি আশি লাখ) টাকা পরিশোধ করে চেকটি ফেরত অথবা বাতিল করার অনুরোধ করি।
উল্লেখ্য: ২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর দেবাশীষ বাগচী মেহেরপুুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর আমলি আদালত মেহেরপুরে উকিল নোটিশের সূত্র ধরে নেগোশিয়েবল ইন্সট্রæমেন্ট এক্টে মামলার আবেদন করলে আদালতের বিচারক মোঃ তরিকুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে সমন জারীর আদেশ দেন। যার মামলা নম্বর-৯০৭/২৩ (মেহেরপুর)। চেক ডিজঅনার হওয়াতে উকিল নোটিশ পাঠানো দেবাশীষ কুমার বাগচির বিরুদ্ধে উল্টো চেক চুরির মামলা করেছিলেন শহীদ সরফরাজ হোসেন মৃদুল।