পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) শুক্রবার রাতে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দায়ের হওয়া এ মামলায় ৪৪ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ২শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী রবিউল ইসলাম রুবেল। তার বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জের হাকিমপুর মৌমারী এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত সিরাজুল ইসলাম।
মামলার প্রধান আসামি হলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দেবীগঞ্জের সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমু।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জ, দেবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম,চেংঠী হাজরাডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বুলু মাষ্টার,দেবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফরিদ হাসান স্বপন, দণ্ডপাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেপাল চন্দ্র রায়, দেবীগঞ্জ উপজেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ মিঠু, দেবীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও কালীগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ, দন্ডপাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কামাল হোসেন, দণ্ডপাল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন সাজু। এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
আসামীদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন ঢাকাইয়াপাড়া এলাকার মৃত খুরশেদ আলমের ছেলে নুর আলম, আব্দুল জলিলের ছেলে চান মিয়া, কালীগঞ্জের বাবুল হোসেনের ছেলে রনি ইসলাম, শিবেরহাট এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে হাবিবুর রহমান ও আমির হামজা, মৃত জুরান আলীর ছেলে সুরুজ্জামানকে আটক করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট সারা দেশব্যাপী যখন শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আন্দোলন শুরু হয় সেদিন রবিউল ইসলাম রুবেল সাধারণ ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিতে দেবীগঞ্জে আসার জন্য রওনা দেন। এরমধ্যে রবিউল ইসলাম রুবেল করতোয়া সেতুর পশ্চিম পাড়ের সড়কে উপস্থিত হওয়ার পর দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমুর নেতৃত্বে রুবেলের ওপর হামলা করা হয়। এতে তার বাম হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রুবেলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। তবে বাস চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ে তিনি চিকিৎসা নেন। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন রবিউল ইসলাম রুবেল।
মামলার বাদী রবিউল ইসলাম রুবেল ঘটনার দিন দেবীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকায় আরো অনেককে মারধর করা হয় বলে উল্লেখ করেন।
মামলা হওয়ার পর এজাহারে থাকা ছয় আসামিকে ইতিমধ্যে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সোয়েল রানা বলেন পলাতক থাকা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে।