পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চাচাতো ভাইকে হত্যার অপরাধে তিন জনের মৃত্যু দন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম রেজাউল বারী এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাষ্ট্রপক্ষ আসামীদের অপরাধ আদালতে প্রমান করতে পেরেছে, বলেই বিচারক এই আদেশ দিয়েছে। এই মামলার ন্যায় বিচারের জন্য দীর্ঘ ৯ বছর অপেক্ষায় ছিলো ভিকটিমের পরিবার। দীর্ঘদিন পরে হলেও আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।ফরহাদ নামে একজন আসামী কারাগারে থাকলেও নুরুজ্জামান ও হাসানুল পলাতক রয়েছে।জমি জমা নিয়ে বিরোধ ছিল বলেও জানান তিনি।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন দেবীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর তাতীপাড়া এলাকার মহিরউদ্দিনের ছেলে নুরুজ্জামান (২৯), ডায়েনা পাড়া এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২১) ,বলরামপুর এলাকার রশিদুল ইসলামের ছেলে হাসানুল ইসলাম (২৩)।
মামলা সূত্রে জানা যায়,আসাদুজ্জামান পায়েল (১৭) গত ২০১৫ সালের ১৮ জুন বাড়ি থেকে হালখাতা খাওয়ার জন্য দেবীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর দেউনিয়া বাজারে যায়। পরের দিন পর্যন্ত ফিরে না আসায় অনেক খোঁজাখুঁজি করে এবং মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও না পেয়ে ২০ জুন থানায় সাধারন ডায়েরি করে।
মামলার বাদী ২২ জুন সকালে ফরহাদের বাসার পিছনে গেলে ফরহাদসহ হাসানুল পরামর্শ করে মালটা ভেসে উঠছে। পরে এ বিষয়টি এলাকায় প্রচার হলে দুজনে গা ঢাকা দেয়।চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে মামলা করতে গেলে বাদীর ভাই নুরুজ্জামানের বাবা মহিরউদ্দিন মামলা করতে নিষেধ করে। পরে মহিরউদ্দিন তার ছেলে নুরুজ্জামানসহ ফরহাদ ও হাসানুলকে ডাকে কয়েকজন ব্যাক্তির উপস্থিতিতে ফরহাদের ঘরে আটকে জিজ্ঞাস করলে তালবাহানা করে।পরে টাকা দেওয়া ও মামলা না করার আশ্বাস দিলে তারা স্বীকার করে, আসাদুজ্জামানকে ফিরিয়ে দেওয়া আর সম্ভব না। হত্যা করার উদ্দেশ্যে কৌশলে অপহরন করে বাজার থেকে এক কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে নিয়ে গলা চেপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
এ সময় অসামী হাসানুল ইসলাম কোমর ও আসামী ফরহাদ হোসেন দুই পা চেপে ধরে রাখে। মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামি ফরহাদ হোসেন তার বাড়ী থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তার ভিতরে ভরে প্রাক্তন মেম্বার আকবর আলীর বলরামপুর সরকারপাড়া গ্রামের পুকুরে ডুবিয়ে দেয়।
২২ জুন লাশ উদ্ধারের পর ভিকটিমের বাবা সুলতান আলী তিনজনকে আসামী করে দেবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
মৃত্যু দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী ফরহাদের স্ত্রী জুলেখা জানান,তার স্বামী দীর্ঘ নয় বছর ধরে আদালতে হাজিরা দিচ্ছে।প্রায় মাস খানেক আগে তাকে আটক করেছে।এ রায় আমরা মানিনা।আমরা হাইকোটে আপিল করব।