পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল আলম এমুর বিরুদ্ধে গরীব দুস্থদের ভিডব্লিউবির ৮১ হাজার কেজি চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রায় ১৫০ জন কার্ডধারীর বিপরীতে ৮১ হাজার কেজি চাল আত্মসাত করেছেন। ভুক্তভোগীরা এই ১৮ মাসে এক ছটাক চালও পাননি। নামের তালিকা থাকা সত্ত্বেও অসহায় মানুষগুলোর ভাগ্যে সেই চালের কোনো সংবাদও পৌঁছায়নি। চেয়ারম্যানের দূর্নীতির কর্মকাণ্ডে এলাকার মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমু পলাতক রয়েছেন। এরপর প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান আব্দুল মজিদ।
তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকার থেকে বরাদ্দকৃত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসের ভিডব্লিউবির চাল বিতরণের সময় প্রায় তিনশ বস্তা চাল উদ্বৃত্ত দেখতে পান। পরে প্যানেল চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সহযোগিতায় অনলাইন থেকে কার্ডধারীদের তালিকা নিয়ে ডাকে আনে চাল বিতরন করেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভিডব্লিউবির চাল গরিব দুস্থদের মাঝে প্রতি কার্ডধারীকে মাসে ৩০ কেজি দেওয়া হয়।দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ৭শ ৩৮ জন কার্ডধারী রয়েছে। খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করে চেয়ারম্যান পরিষদ থেকে চাল বিতরণ করবেন।
সেখানে সঠিকভাবে বিতরণের জন্য ট্যাগ অফিসার হিসেবে দেওয়া হয়েছে, ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীকে। মাসের পর মাস চেয়ারম্যান দূর্নীতি করে আসলেও তার কোন খবর রাখেননি কৃষি এই কর্মকর্তা। ২০২২ সালে ভিজিডি-ভিডব্লিউবির ২৫ মেট্রিকটন চাল এই চেয়ারম্যানের আত্মসাতের খবর প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
ভুক্তভোগী সরকার পাড়া এলাকার মোছা.আমেনা বেগমের স্বামী নুর আলম হক বলেন ,আমার নাম চালের তালিকায় ১৮ মাস ধরে আছে, অথচ আমি কিছুই জানি না। কেউ এসে জানায়নি। সম্প্রতি আমাকে বলা হয় পরিষদে আমার চাল রয়েছে। পরে দুই বস্তা চাল পেয়েছি।
ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান বলেন, চেয়ারম্যান পলাতক থাকার আগে থেকেই এসব আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও তিনি ভিজিডির চাল আত্মসাত করেছিলেন।
দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে চাল বিতরণের সময় এসব গরিব মানুষের নামে চাল তোলা হলেও ,তারা চাল নিতে ইউনিয়ন পরিষদে আসেননি। পরে আমরা তাদেরকে খুঁজে বের করে চাল দিয়েছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় দেড়শ জন ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।