খুব ছোট কালেই পরিবার থেকে নিখোঁজ হয় আকরাম হোসেন আরিফ (১৩)। এরপর সমাজকর্মীর মাধ্যমে তার ঠাঁই হয় পঞ্চগড়ের আহছানিয়া মিশন শিশু নগরীতে। এখানেই পড়াশোনা করছে সে। এরই মধ্যে পরিবারের সন্ধান মেলায় দীর্ঘ ৭ বছর পর আরিফ ফিরে পেলো তার পরিবার।
শনিবার রাতে পঞ্চগড় সদর থানার মাধ্যমে আরিফকে তার মামা বোরহান উদ্দীন পাটোয়ারীর নিকট হস্তান্তর করেন নগরী কর্তৃপক্ষ। একইদিন পরিবারের সন্ধান পাওয়ায় দেড় বছর ধরে নগরীতে থাকা শিশু ইমরান আলীকেও তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়।
নগরী সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৯ মে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় আরিফ। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ৬ বছর। সেসময় পরিবারকে না পেয়ে পথশিশু হিসেবে ঘুরে বেড়াতে থাকে সে। পরে একটি সংস্থার মাধ্যমে একই বছরের ১৭ জুলাই আহছানিয়া মিশন শিশু নগরীতে ঠাঁই হয়। বর্তমান সে এখানে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। একইভাবে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে কমলাপুর রেল স্টেশনে পথশিশুর পরিচয়ে চলছিলো ইমরান। তার বাড়ি নেত্রকোনায়। ওই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে এই নগরীতে ছিলো সে।
আহছানিয়া মিশন শিশু নগরীর সমাজকর্মী ইউসুফ আলী বলেন, আমরা এতিম ও পথশিশুদের নিয়ে কাজ করি। যাদের পরিবারের সন্ধান পাইনা তারা নগরীতে থেকে পড়ালেখা করে। পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করি তাদের পরিবার খুঁজে পেতে, সন্ধান পেলে আইনি প্রক্রিয়া মেনে তাদেরকে হস্তান্তর করি।
আরিফের মামা বোরহান উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, গত ৬ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও ভাগ্নেকে পাইনি। ধরে নিয়েছিলাম কখনোই পাবোনা। হঠাৎ করেই কয়েকদিন আগে একজন ফোন দিয়ে এখানকার কথা জানায়, তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভিডিও কলে কথা বলে নিশ্চিত হই এটা আমামের হারিয়ে যাওয়া আরিফ। আহছানিয়া শিশু নরগরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
২০১২ সালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের জলাপাড়া এলাকায় শিশু নগরীটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান এখানে থেকে ১৬০ জন সুবিধা বঞ্চিত শিশু পড়ালেখা করছে। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় এখান থেকে ৬ জন উত্তীর্ণও হয়েছে।