পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বনবিভাগের দেবীগঞ্জ রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জব্দকৃত সিংহভাগই গাছই বিক্রি করে দিয়ে হজম করে দিলেন। দেবীগঞ্জ রেঞ্জের বড়শশী ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকা হতে বনবিভাগের জব্দকৃত ইউক্যালোট্রোপিছ গাছের কিছু অংশ রেঞ্জ অফিসে জব্দ দেখালেও অর্ধেকের বেশি গাছ স-মিলে বিক্রি করে গাছ বিক্রির টাকা হজম করে দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর ধারনা কামরুজ্জামান এর আগেও এমন করে বন বিভাগের লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ রাতের অন্ধকারে স মিলে বিক্রি করে দিয়ে আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন। রক্ষকই ভক্ষকে পরিনত হয়েছে। অভিযুক্ত কামরুজ্জামান টুটুল দেবীগঞ্জ রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
জানা যায় গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে বড়শশী ইউনিয়নের সর্দার পাড়া এলাকায় রাতের আঁধারে অজ্ঞাত বনদস্যু বাহিনী ইউক্যালোট্রোপিছ গাছ কেটে ফেলে পালিয়ে যায়। এসময় বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাননি। বনদস্যুদের না পেয়ে গাছগুলো জব্দ করে ভাউলাগঞ্জ বাজারে রাকিবুল ইসলামের স-মিলে নিয়ে যান। গত (১৩ নভেম্বর) বুধবার সকালে গাছগুলো স মিলে দিয়ে অফিসে চলে যান কামরুজ্জামান।
জব্দকৃত হওয়ার ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বিষয়টি গনমাধ্যমের কাছে সংবাদ চলে আসে। সংবাদকর্মীরা গাছগুলো জব্দ করার বিষয়টি জেনে ফেলায় বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান নিজেকে বাঁচানোর জন্য তড়িঘড়ি করে স-মিলে রাখা ইউক্যালোট্রোপিছ গাছগুলো বড়শশী বিট অফিস কক্ষের পিছনে রাতাভর পুনরায় মজুদ করে।
স্থানীয়রা জানান, গত (১২ নভেম্বর) রাতে অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি ইউক্যালোট্রোপিছ গাছ কেটে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রাতে এসে ফেলে রাখা গাছ গুলো জব্দ করে। পরেরদিন (১৩ নভেম্বর) সকালে প্রায় ৪৫ হতে ৫০ পিছ ইউক্যালোট্রোপিছ গাছগুলো নিয়ে যায়।
এর দুই তিনদিন পর আমরা জানতে পারি যে বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জব্দ করা গাছগুলো বড়শশী বিট অফিসে না নিয়ে তিনি ভাউলাগঞ্জ বাজার সংলগ্ন কাঠের স-মিল রাকিবুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির স-মিলে দিয়ে দেন। আমাদের জানা মতে সরকারি বন বিভাগের গাছ যদি কেউ রাতের আঁধারে অবৈধ ভাবে কাটে সেই সমস্ত গাছ জব্দ হলে নিকটতম বিট অফিসে জমা হয়।
দেবীগঞ্জ উপজেলা বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, গত (১৩ নভেম্বর) রাতে জানতে পারি সর্দারপাড়া এলাকায় অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি গাছ কাটছে সেখানে উপস্থিত হলে বনদস্যু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে আমি পড়ে থাকা ইউক্যালোট্রোপিছ গাছগুলো ভাউলাগঞ্জ বাজার সংলগ্ন কাঠের স-মিল রাকিবুল ইসলামের জিম্মায় রেখে দেই।
জব্দকৃত ইউক্যালোট্রোপিছ গাছগুলো বিক্রি করার কথা প্রসঙ্গে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি না করলেও হয়। আপনি আমার সাথে দেখা করেন আপনাদের কিছু দেওয়া যাবে।
দেবীগঞ্জ উপজেলার বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশিকান্ত মালাকার বলেন, গাছ কোথায় জব্দ হয়েছে কে জব্দ করেছে। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা এবং এ ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। যে গত ১২ নভেম্বর রাতে বড়শশী ইউনিয়নের সর্দার পাড়া এলাকায় বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ইউক্যালোট্রোপিছ গাছ জব্দ করে স-মিলে রেখেছেন। যদি এমন টা হয়ে থাকে তাহলে সে ঠিক করেনি।