পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগের টাকাকে কেন্দ্র করে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, ঝাড়ুদার ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অফিস সহায়ক পদে সবুজ শর্মা, ঝাড়ুদার পদে আর আয়া পদে অপর দুই জনকে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই ওই তিন পদে তিন জনকে নির্বাচিত করার জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন জনের কাছ থেকে ২১ লাখ ১০ হাজার টাকাও নেয়া হয় নিয়োগের জন্য।
আব্দুল মজিদ বলেন, এ টাকার মধ্যে ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকা রয়েছে বিদ্যালয়ের সভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বাবুর নিকট আর ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের নিয়োগের বিষয়ে সন্দেহ থাকায় নিয়োগের জন্য নেয়া টাকাগুলো ফেরতও দিয়েছি।
আব্দুল মজিদ বলেন, সে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব আর টাকা চাওয়ার কারনে সোনাহার বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম আমার উপর হামলা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বিজ্ঞাপন হওয়া অফিস সহায়ক, ঝাড়ুদার ও আয়া পদে তাদের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দেয়ার জন্য সোনাহার বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি, সোনাহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ মহিলা কলেজের প্রভাষক মন্জুরুল ইসলাম বাবু ও দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সোনাহার বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। তাদের কথা না শুনার কারনে তারা একত্রিত হয়ে আমার উপর হামলা করেন।
অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ১২ লক্ষ টাকা দেন সবুজ শর্মা। সবুজ শর্মা বলেন, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম আমাকে টাকা দিয়ে নিয়োগ নিতে নিষেধও করেছেন। আমি ওই ১২ লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ের সভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বাবুকে দিয়েছি।
দেবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমুও তাদের সাথে একত্রিত হয়ে তাদেরকে নিয়োগ দিতে আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন।
প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে মারপিটের ঘটনা জানা জানি হলে দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে দেখতে আসেন দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
দেবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও পঞ্চগড় জেলার জিয়া পরিষদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, বিদ্যালয়ের নিয়োগের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাচ্ছি ঘটনাটি মামলা পর্যন্ত যেন না গড়ায়। দু পক্ষ বসে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করা হবে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বাবুকে না পাওয়ার কারনে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।