হত্যা, গুমের মামলার প্রধান আসামি সাবেক রেলমন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া আল আমিন নামে এক রিকশাচালককে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে মামলা হয় ১০ নভেম্বর।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে হাজির করার পর শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আশরাফুজ্জামান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে সাবেক এই মন্ত্রীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজনভ্যানে করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাহারায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে আনা হয়।
আদালত সূত্রে জানায়, পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুম হয় আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হল পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম, হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জ্বলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আদম সুফি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিলেন আল আমিন।
তাকে হত্যা করে গুম করা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামিকে আদালতে তোলা হলে আমরা আসামির বিরোধিতা করেছি। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। খুব শিগগিরই রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনকে এজাহারের প্রধান আসামি করা হয়েছে। উনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো। তাকে আদালতে তোলার পর জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। তবে আদালত তাকে ডিভিশন মঞ্জুর করেছেন। একই সঙ্গে যে এজাহারে অভিযোগ তোলা হয়েছে। যেহেতু ভিকটিমকে পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে এটা কোনোভাবে ৩০২ ধারায় পরতে পারে না। আমরা বিষয়টি আদালতকে অবগত করেছি।