পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগের ঘুষের টাকা ফেরত দিতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল আলম ও সভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বাবু। এদিকে ভুক্তভোগী সবুজ শর্মা টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দ্রুত সমস্যা সমাধান করার জন্য সেনাবাহিনীর নিকট প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি পদে নিয়োগ প্রত্যাশী সবুজ শর্মা বলেন, অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছি নিয়োগ কমিটির সদস্যদের কাছে ৩ মেয়াদে। প্রথম দফায় ২ লক্ষ টাকা স্কুলে, দ্বিতীয় দফায় ৭ লক্ষ টাকাও স্কুলে দেয়া হয়েছে। আর বাকি ৩ লক্ষ টাকা তৃতীয় দফায় প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে দিয়ে আসছি। পরে আমার নিয়োগ না হওয়ার কারনে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি ৯ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা এখনো দেয়নি। যার কারনে আমি সেনা ক্যাম্পে অভিযোগও দিয়েছি।
অভিযোগ দেয়ার পর প্রধান শিক্ষক নজরুল আলম ও সভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বাবু সেনাবাহিনীর কাছে সময় নিয়েছে টাকা ফেরত দেবার জন্য। কিন্তু কবে টাকা পাবো সেটা আমি এখনও জানিনা। আমি মানুষের কাছে টাকা হাওলাত নিয়ে আবার কিছু টাকা ঋন করে দিয়েছি। টাকা টা না পেলে আমাকে পথে বসতে হবে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বাবু সোনাহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ মহিলা কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
মন্জুরুল ইসলাম বাবু বলেন, স্কুলের বিষয় নিয়ে কথা বলার কোন সুযোগ নাই। আমি বাইরে আছি। এটা নিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সেটার সিদ্ধান্ত পরে হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলম বলেন, নিয়োগের যে টাকা আছে সেগুলো মজিদ মেম্বারের কাছে আছে। আমার কাছে কোন টাকা নাই। মজিদ মেম্বার নিয়োগ কমিটির ক্যাশিয়ার ছিল। তিনি আরও বলেন, মজিদ মেম্বার, হাব্বুল আর ডাবলুর ইন্ধনে এসব হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নিয়োগের নাম করে নেয়া ঘুষের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বিদ্যালয় চত্বরে মিমাংসার জন্য বসা হয়। সেদিন বিদ্যালয়ের সভাপতি অনুপস্থিত থাকার কারনে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল আলম ঘুষের টাকা ফেরত না দেয়ার কারনে আর মিমাংসা হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিকেল ৩ টা সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসি ও নিয়োগবঞ্চিতরা।
অফিস সহায়ক , ঝাড়ুদার আর আয়া পদে নিয়োগের জন্য সার্কুলার দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । পরীক্ষার আগেই ওই তিন পদে তিন জনকে নির্বাচিত করার জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন প্রার্থীদের নিকট হতে নিয়োগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।