ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় তিন মুসলিম নারীর মাথার চুল জোরপূর্বক কেটে দেওয়ার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। ঘটনার মূল অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন দাস (৩৭) কে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আখাউড়া পৌরসভার একটি বাসা থেকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে সে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছমিউদ্দিন। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সুমন দাসের স্থায়ী ঠিকানা আখাউড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মালিহাটি (রেল কলোনি) এলাকায়। তার পিতা মৃত নারায়ণ দাস রেলের সাবেক ড্রাইভার ছিলেন। বর্তমানে তিনি মসজিদপাড়ায় ফায়ার সার্ভিসের পাশের একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। অভিযুক্ত সুমন ‘এস.এম ইলেকট্রিক কর্নার’ নামের একটি ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক।
জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আখাউড়া সড়ক বাজারে এনসিসি ব্যাংকের নিচে চাঁদপুর অ্যালুমিনিয়াম স্টোরের সামনে এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, চুরির অপবাদ দিয়ে বোরখা পরিহিত তিন নারীর মাথার কাপড় খুলে চুল কেটে দেন সুমন দাস ও তার সহযোগী ‘মা টেলিকম’-এর মালিক মো. রাব্বি। একইসাথে এক শিশুসহ অন্য নারীদেরও বেধড়ক মারধর করা হয়।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে চরম ক্ষোভ দেখা দেয় সাধারণ মানুষের মাঝে। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক সুমন দাসকে বাধা দিলে তিনি উল্টো তাদের হুমকি দেন। এদিকে সোমবার সকাল থেকে শত শত মানুষ আখাউড়া থানা ঘেরাও করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছমিউদ্দিন বলেন, “অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত রুখতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ভিডিও ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”