ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা মাছিহাতা ইউনিয়নের পাঘাচং গ্রামের আল বায়তুল মামুর সালাফি জামে মসজিদে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার মসজিদ নির্মাণ কাজ চলাকালে কিছু মৌলভী নির্মাণ কাজ বন্ধের হুমকি ও আলটেমেটাম দেয়।
পরে সোমবার দুপুরের দিকে আবার মসজিদে হামলা করে পুরো মসজিদটি গুড়িয়ে দেয়। সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায় একদল মৌ-লোভীর ও স্থানীয় কিছু লোকজন মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করে মসজিটি ভাংচুর করে এবং মসজিদ নির্মাণে শ্রমিকদের মেশিন ও অন্যান্য মালামাল সহ প্রায় ১০/১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এতে মসজিদ কমিটির বেশ কয়েকজনকে গুরতর আহত হয়। আহতদের জেলা সদর হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়া হয়। মসজিদ নির্মাণে বাধা এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারদাবী করে এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটি । এরই মধ্যে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ছড়িয়ে পরে।
জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার মোখলেছুর রহমান এলাকাবাসীর অনুরোধে নিজ ও পৈত্রিক জমিতে মসজিদ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ জমিয়তে আহলে হাদিস এর পরিচালনায় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া কোরআন সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে ১৪১৫৩ নং নিবন্ধিত দলিল মূলে তার ৬ শতক জমি রেজিষ্ট্রেশন এর মাধ্যমে ওয়াকফ করে। পরবর্তীতে সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ২০২১ সালেই টিনের ঘরের একটি মসজিদ নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণভাবে ইবাদত করে আসছিল এলাকার গ্রামবাসী। কিন্তু ২০২৪ সালে ৫তলা মসজিদ নির্মাণের জন্য নির্মাণ কাজ শুরু করলে পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার কিছু মৌ-লোভীর কুনজর পড়ে এবং মসজিদটি তাদের দখলে নেয়ার জন্য এলাকার গ্রামবাসীকে ভুল, বিভ্রান্ত ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরলমনা গ্রামবাসীকে ক্ষেপিয়ে তোলে ও অপপ্রচার চালায় ভিন্ন মতালম্বির সেই ইমামগণ। ফলে হুমকি ধুমকি দিয়ে ও ক্ষমতার জোরে মসজিদ উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয় ও লাগাতার হুমকি দিতে থাকে।
অথচ বাংলাদেশ সংবিধানের ৪১ ধারা এর (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তি বা দল/ উপদল নিজ নিজ মতবাদ ও বিশ্বাস/আকিদা অনুযায়ী নিজেদের ধর্মীয় উপাসানালয় গড়া ও রক্ষাণাবেক্ষণ এর অধিকার রয়েছে। আর কেউ যদি অন্যের মসজিদে অনধিকার হস্তক্ষেপ করে তাহলে তা পরিষ্কার সংবিধান বিরোধী বা সংবিধান লংঘন। পরিশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও টিএনওর হস্তক্ষেপে মুচলেকার মাধ্যমে বিষয়য়টি সমাধান হলেও, দখলবাজ উগ্রবাদী হজুর গুটি কয়েক গ্রামবাসীকে নিয়ে পূনরায় বাধা প্রদান করে। ফলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে ৪৭৭২ নং পিটিশন মূলে মসজিদ নির্মাণের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করলে পাঘাচং গ্রামের তথাকথিত উগ্রবাদী কিছু মৌ-লোভী হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, ডিসি, এসপি মানবেনা বলে প্রকাশ্যে মাইকে হুমকি প্রদান করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোজাফফর হোসেন জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আনইআনুক ব্যবস্থা নেয়া হবে।