পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসটি নিজেদের বাড়িতে পরিণত করা হয়েছে। তেতুঁলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসে নিয়ম ভেঙ্গে দীর্ঘ ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মরত রয়েছেন একই পরিবারের চারজন। তাদের বদলীর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কার্যকরী ব্যবস্থা নিচ্ছেনা অজ্ঞাত কারণে। কর্মকর্তারা তাদের কাছে জিম্মি নাকি এটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব, তার ছোট ভাই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসাদ্দেকুর রহমান, মোসাদ্দেকুরের স্ত্রী শারমিন আক্তার, তাদের চাচাত ভাই মির্জা শাহরিয়ার রাজিব। সবাই উপজেলার তিরনইহাট এলাকার বাসিন্দা।
তারা যোগদানের পর থেকে র্দীর্ঘ সময়ে এ অফিসে কর্মরত থাকার কারণে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। অফিস রাম রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে সারের ডিলার, কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে অফিস, আবার কেউ করছে ঠিকাদারিও। স্থানীয় কৃষকসহ সচেতন মহল অবিলম্বে ওই কর্মকর্তাদের তেঁতুলিয়া থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুল মোতালেব উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা, তিনি তেঁতুলিয়া কৃষি অফিসে যোগদান করেন ২০১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর। পরে আব্দুল মোতালেব কৃষি অফিসটিকে পরিবারতন্ত্র বানিয়ে রাজত্ব করছেন। তার আপন ভাই মোসাদ্দেকুর রহমান একই অফিসে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে।মোসাদ্দেকুরের স্ত্রী শারমিন আক্তার ১০ বছর,
তাদের সম্পর্কে চাচাত ভাই মির্জা শাহরিয়ার রাজিব কর্মরত রয়েছেন ১২ বছর ধরে। সরকারী বিধি মোতাবেক সংস্থাপন বিভাগ কর্তৃক ইস্যুকৃত (স্বারক নং ই ডি .এস এ-এ/৮২-২২৭ তাং ৬-৫-১৯৮২ ইং মূলে কোন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী একাধিক ক্রমে ৩ বছরের অধিক সময় এক স্থানে চাকুরী করতে পারেন না, মর্মে নির্দেশ থাকা স্বত্বেও তারা একটানা কেউ ১৪ বছর কেউ ১০ বছর ধরে এ অফিসে কিভাবে চাকুরী করে যাচ্ছেন তা নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে সারের ডিলারের সাথে চুক্তি করে দুই মাসের একটি ডিওদেন ডিলারকে, একটি নিয়ে যায় তাদের দোকান তিরনইহাটে।সার সংকটের সময় উপজেলায় অন্য কোথায় না পেলেও তাদের দোকানে সার পাওয়া যায়।এছাড়াও কৃষি প্রণোদনা, বিভিন্ন সার বীজ বিতরনেও করেন স্বজনপ্রীতি।
স্থানীয়দের অভিযোগ আব্দুল মোতালেব ফ্যাসিস্ট সরকারের তৎকালীন এমপির সহযোগিতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের টিআরের টাকায় গাছ রোপন প্রকল্পের ঠিকাদারী করেছেন। কৃষি অফিসটিকেও করেছেন নিয়ন্ত্রণ। কোন সংবাদকর্মী তথ্য নিতে গেলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌস দেখিয়ে দেন মোতালেবকে। পরে মোতালেব বিভিন্ন কিছু বুঝিয়ে তথ্যের আবেদন জমা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন।
কৃষি অফিসে তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে যমুনা টেলিভিশনের প্রতিনিধি রনি মিয়াজির নামে চাঁদাদাবীর অভিযোগও করেছেন কর্তৃপক্ষ।সম্প্রতি রাস্তায় অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মির্জা শাহরিয়ার রাজিব, মোসাদ্দেকুর রহমান, ইলিয়াস ফারুক ও আব্দুল মোতালেব।
ইকবাল বাহার নামের এক সংবাদকর্মী বলেন, তথ্য অধিকার আইনের আবেদন ফরম পুরন করে অফিসে জমা দিতে গেছি। কর্মকর্তা মোতালেবকে দেখিয়ে দেন। সেখানে গেছি তিনি আবেদনপত্র গ্রহন না করে আমাকে অর্থ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পঞ্চগড়ের উপ-পরিচালক মো.আব্দুল মতিন সবকিছু যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।