পঞ্চগড়ের একটি দাখিল মাদরাসায় তিন জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে ১৩ জন শিক্ষক। এর মধ্যে সরকারি অংশের বেতন ভাতা নেন ১২ জন শিক্ষক। মাদরাসাটিতে প্রথম শ্রেনী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র ষষ্ঠ শ্রেণীর তিনজন শিক্ষার্থীকে উপস্থিত পাওয়া গেছে। তিন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন ১৩ হন।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার হোসেনাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার এ চিত্র সরজমিনে ফুটে উঠেছে। যদিও কাগজে কলমে প্রতিষ্ঠানে ১৬৩ জন ছাত্র-ছাত্রী দেখানো হয়েছে। রোববার দুপুর ১২ টায় বোদা উপজেলার হোসেনাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার এ চিত্র দেখা। এদিকে ওই মাদরাসায় শিক্ষক ১৩ জন এবং কর্মচারী ৩ জন রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পঞ্চগড় জেলা শিক্ষা অফিস ও রংপুর আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তাগণের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন নাগরিক ও এলাকাবাসী। তারা জানান, এমপিও ভুক্তের দীর্ঘদিন হলেও প্রতিষ্ঠানে ১০-১৫ জনের বেশী ছাত্র ছাত্রী ছিলনা। শিক্ষার্থী না থাকায় মাদরাসা বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের মধ্যেই। মাদরাসাটি থাকা না থাকা একই কথা। প্রতি বছর শিক্ষকের বেতন বাবদ সরকারের লাখ লাখ টাকা অপচয় হচ্ছে।
সরেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ শ্রেণি কক্ষে চেয়ার-টেবিল থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নাই। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে তিনজন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে।এছাড়া প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পাওয়া যায়নি সুপারিন্টেনডেন্ট মোছা.রৌশনারা বেগমকে।
তথ্যমতে, মাদরাসাটি ২০০২ সালে এমপিওভুক্ত হয়। দফায় দফায় ১২ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারীও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। বেতনও পাচ্ছেন নিয়মিত। ২০২৪ সালে দাখিল পরীক্ষায় ১৩ জন ও ২০২৫ সালে ৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
অভিযোগ রয়েছে, নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে গোপনে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কাগজপত্র জালিয়াতি করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কয়েকজন শিক্ষককে। মাদরাসায় নেই শিক্ষার পরিবেশ। ফলে দিন দিন শিক্ষার্থী শূন্যতা হয়ে পড়ছে মাদরাসাটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, মাদরাসাতে ১০-১২ জনের বেশি ছাত্র-ছাত্রী আসে না। তাছাড়া শিক্ষার মান একেবারে ভালো না। মাদরাসার শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আনতে অভিভাবক সমাবেশসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তদারকির কথা জানান অভিভাবকরা।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় হোসেনাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেনডেন্ট মোছা.রৌশনারা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, মাদরাসার কাজের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে আছি।
বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো.আইবুল ইসলাম বলেন,প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।