পঞ্চগড় প্রেসক্লাব দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে সংবাদকর্মীদের দুই পক্ষের উত্তেজনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চন্দ্র দাস এই আদেশ জারি করেন।
পরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন প্রেসক্লাব হলরুমসহ প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে সিলগালা করে দেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে পঞ্চগড় সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার জুবায়ের হোসেন সিয়াম, পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান, পুলিশ সেনাবসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর স্থানীয় সংবাদকর্মীদের একটি পক্ষ যারা নতুন সংবাদকর্মী এবং প্রেসক্লাবের সদস্য নন এমন সাংবাদিকরা পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে ঢুকে অবস্থান নেন। এসময় আরেক পক্ষ যারা প্রেসক্লাবের সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিক তারা প্রেসক্লাব থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর থেকে প্রেসক্লাব দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলতে থাকে।
এক পর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলে ক্লাবের মুল ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এনিয়ে রাতেই একটি পক্ষ যারা প্রেসক্লাবের সদস্য না তারা প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় আরেকটি পক্ষ যারা প্রেসক্লাবের সদস্য তারা করতোয়া সেতুর প্রবেশ পথে পঞ্চগড়-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় চরম দুর্ভোগ পড়েন পথচারীরা। গভীর রাতে প্রশাসনের আশ্বাসে প্রায় দেড় ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেয় দুই পক্ষ। তবে বৃহস্পতিবার সকালে তালা ভেঙে সাংবাদিকদের দুটি পক্ষই আবারও প্রেসক্লাবে অবস্থান কর্মসূচি দেয় এবং অবস্থান নেয়।
এসময় উভয় পক্ষের সংবাদকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরই মধ্যে উভয়পক্ষের সংবাদকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারিসহ অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলগালা করে দেয়া হয়। একই সাথে প্রেসক্লাব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয় ।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় পঞ্চগড় প্রেসক্লাব ও শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে জালাসী মোড় পর্যন্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জনসমাবেশ, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাইক বাজানো, সভা ও মিছিল পরিচালনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থা, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, চিকিৎসক, ঔষধ সরবরাহকারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর প্রযোজ্য হবে না। কেউ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও।