২০২৪ সালের মে মাসে ডাক পড়ে জেমস অ্যান্ডারসনের। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড জানায় তারা কিংবদন্তি পেসারের কথা শুনতে চান। কিন্তু হলো উল্টো। একটা প্রশ্নের মুখে পড়েন অ্যান্ডারসন, ‘অবসর নিয়ে কি ভাবছেন?’ উত্তর দেন। মনপূর্ত হয়নি বোর্ডের। তার পড়েই জানানো হয় সিদ্ধান্ত, ‘টেস্টের পরিকল্পনায় আপনি আর নেই।’
সেদিনই বৈঠকে বসে বোর্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কি, কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকস। তারা সিদ্ধান্ত নেন, সাদা পোশাকের ক্রিকেটে নতুন কাউকে দরকার। যিনি লম্বা সময় সার্ভিস দেবে। একপ্রকার চাপের মুখে পড়ে যান অ্যান্ডারসন। বাধ্য হয়েই ২ মাস পর নেন অবসর।
অ্যান্ডারসন অবসর নেওয়ার নেপথ্য এবং সেদিনের ঘটনা জানিয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কোচ ও অধিনায়কের দিকে আঙুল তুলেছেন। ৪২ বছর বয়সেও দুর্দান্ত বোলিং করা অ্যান্ডারসন বলেছেন, অবসর নেওয়ার ইচ্ছা ছিলই না আমার। কিন্তু পরিস্থিতি এমন করা হয়েছিল।
আমি অবসর নেওয়ার কথা ভাবতাম আরও ছয় মাস, কি এক বছর বা দেড় বছর পর। কিন্তু সেই সময় আমার মনে অবসরের কোনও ভাবনাই ছিল না
জেমস অ্যান্ডারসন, সাবেক পেসার
টেস্টে ৭০০ উইকেটের মালিক বলেছেন, ‘এখনও অবসরের বিষয় নিয়ে দোলাচলে আছি। আসলে পরিস্থিতি তখন হাতে ছিল না। ওরা আমায় দল থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। তাই সেই সময় অন্য কিছু করারও ছিল না। আমি অবসর নেওয়ার কথা ভাবতাম আরও ছয় মাস, কি এক বছর বা দেড় বছর পর। কিন্তু সেই সময় আমার মনে অবসরের কোনও ভাবনাই ছিল না। আমার মধ্যে সেই সময় খেলার ইচ্ছা বা খিদেটা ছিল। ট্রেনিং করতে, নিজের দক্ষতার জানান দিতে তখনও মুখিয়ে ছিলাম।’
ওই বছর জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। তবে এখনও বোর্ডের সঙ্গে আছেন অ্যান্ডারসন। ইংলিশদের বোলিং মেন্টর হিসেবে আছেন, চালিয়ে যাচ্ছন কাউন্টি ক্রিকেটও। দলের সঙ্গে থাকার জন্যই মেন্টর হয়েছেন জিমি, ‘যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পরই দল ছেড়ে দিতাম, তাহলে আমার জন্য বিষয়টা খুব কঠিন হত। তাই দলের সঙ্গে থাকতে, ড্রেসিংরুমে থাকার জন্যই দলের সঙ্গে থেকে যাই। সেই সময়ের আমার অভিজ্ঞতাটা আমি বলে বোঝাতে পারব না, কারণ আমি কখনও অবসর নিয়ে চিন্তাই করতে পারিনি সেই সময় পর্যন্ত। তবে শেষ দিনে প্রচুর মানুষকে আসতে দেখেছিলাম।’
এখনও যার খেলার ক্ষুধা আছে, তার সামনে যদি আরেকবার সুযোগ আসে তবে কি খেলবেন? অ্যান্ডারসন মনে করেন এমন সুযোগ আসবে না। যদি আসে তবে অবশই খেলতে চান, ‘সত্যি বলছি, ইংল্যান্ড দলের দরজা আমার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। যদি ডাক পাই তাহলে নিশ্চয় আমি সেটা নিয়ে ভাবব। কিন্তু আমি জানি সেটা কোনওদিন হবে না।’
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ এবং পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি জেমস অ্যান্ডারসন। এখন পর্যন্ত ১৮৭ টেস্ট খেলে ৭০০ উইকেট শিকার করেছেন ডানহাতি এই পেসার। টেস্টে তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে কেবল অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন (৭০৮) ও শ্রীলংকান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরানের (৮০০)।