চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় পঞ্চগড়ের বিভিন্ন উপজেলার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। এনিয়ে চলছে এলাকাবাসীর ক্ষোভ। শিক্ষকদের পাঠদানের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক অভিভাবক।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফলাফল দেখে জানা গেছে, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার চারটি এবং তেঁতুলিয়া উপজেলার ১ টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি।
পাশ না করা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী দাখিল মাদরাসা, মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসা, কুড়ালীপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা, ডাবরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া দাখিল মাদরাসা।
জানাগেছে, ময়দানদিঘী দাখিল মাদরাসা থেকে ২৪ জন, মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসা থেকে ১০ জন, কুড়ালীপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা থেকে ৪ জনের মধ্যে ৩ জন, ডাবরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১০ জন এবং তেঁতুলিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে ১৬ জনের মধ্য ৮ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়।
ময়দানদিঘী দাখিল মাদরাসা ভারপ্রাপ্ত সুপার মুসলিমুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত মাদরাসায় আসে নাই। তারা শুধু পরীক্ষার সময় আসে পরীক্ষা দিতে। আমি অভিভাবকদের বলছি ছেলে-মেয়েদের ঠিকমতো মাদরাসায় পাঠাতে। তারা ফরম ফিলাপও করতে চায় না, আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে জোর করে ফরম ফিলাপ করিয়েছি।
ডাবর ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এবারের ব্যাচটা একটু খারাপ ছিল। এজন্য এই অবস্থা।
মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসার সুপার মকবুল হোসেন প্রধান বলেন, ছাত্ররা ঠিকমতো বাড়িতে বই পড়েনা। তারা সব সময় মোবাইল ধরে ব্যস্ত আর সাইকেল নিয়ে ঘুরাঘুরি করে। পড়ালেখা ঠিকমত না করার কারণে সবাই ফেল করেছে।
কুড়ালীপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার নুর নবী বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এখনও এমপিও ভুক্ত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা কোনরকম মাদরাসাটি ধরে আছি। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আসেনা। অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে। বিভিন্ন কারণে ফেল করেছে।
বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আইবুল ইসলাম বলেন, ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে দেখবো কি কারণে শিক্ষার্থীরা ফেল করলো। আমরা এটি উদঘাটন করে উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ সকলকে বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবো।
পঞ্চগড় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের কেউ পাশ করে নাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আগামী বছর যাতে এ ধরণের সমস্যা না হয়। এজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।