বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষায় সহায়তা করার লক্ষ্যে দেশে একটি অফিস চালুর জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) কার্যালয়ের সঙ্গে তিন বছরের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
এই মিশনের উদ্দেশ্য হলো, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সুশীল সমাজের সংস্থাগুলোকে প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া। এর উদ্দেশ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে তার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা পূরণে সহায়তা করা।
শনিবার (১৯ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিযে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগটি সংস্কার ও জবাবদিহির প্রতি আমাদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের মধ্যে ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়া প্রতিফলিত করে।
এতে আরও বলা হয়, আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের কিছু গোষ্ঠী জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অনুভূত আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটি সমাজ। আমরা নাগরিকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, যারা বলেছে যেকোনও আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের এই মূল্যবোধগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।
অতএব, ওএইচসিএইচআর মিশন পূর্ববর্তী সরকারের দ্বারা সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন মোকাবিলা ও প্রতিরোধ এবং লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করার দিকে মনোনিবেশ করবে। এটি দেশের প্রতিষ্ঠিত আইনি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে পড়ে এমন কোনও সামাজিক এজেন্ডা প্রচারে কাজ করবে না।
আমরা আশা করি, মিশনটি সর্বদা স্বচ্ছতা প্রদর্শন করবে এবং স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রাখবে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাস্তবতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে কার্যক্রম পরিচালনায় জাতিসংঘ অঙ্গীকারবদ্ধ।
যদি সরকার মনে করে, এই চুক্তি অংশীদারত্ব আর জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তাহলে সরকার চুক্তি থেকে সরে আসার সার্বভৌম কর্তৃত্ব বজায় রাখে।
এখানে লক্ষণীয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ডের সময় যদি এ ধরনের একটি অফিস বিদ্যমান থাকতো, তাহলে এসব অপরাধের অনেকগুলোই যথাযথভাবে তদন্ত, নথিভুক্ত ও বিচার করা যেতো। মানবাধিকারের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার অবশ্যই ন্যায়বিচারের মধ্যে নিহিত থাকতে হবে, আদর্শের ভিত্তিতে নয়। সরকার এই অংশীদারত্বকে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার এবং আমাদের নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা বাড়ানোর একটি সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করে, যা আমাদের মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত, আমাদের আইন দ্বারা গঠিত এবং আমাদের জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।