সাংবাদিক পরিচয়ে অব্যাহত চাঁদাবাজি, হুমকি ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে কথিত সাংবাদিক এস এম ফয়েজের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিৎলা পাটবীজ খামারের শ্রমিক কল্যাণ সমিতি। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে খামার অফিসের সামনে আয়োজিত এ মানববন্ধনে খামারের শতাধিক শ্রমিক—কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার। সমিতির পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতা মহিউদ্দীন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সমিতির সাবেক সভাপতি ওমর আলী, সদস্য নাজিম উদ্দীন, শফিকুল ইসলাম কাদা ও লিটিল হোসেন।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ফয়েজ দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে আমাদের মাতৃভূমি নামের একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে চিৎলা পাটবীজ খামারের শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মনগড়া ও ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার করে তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছেন। এসব সংবাদে শ্রমিকদের মান—সম্মান ক্ষুণ্ণ হওয়ার পাশাপাশি চাকরি হারানোর ভয়েও ভুগতে হচ্ছে অনেককে।
তারা আরও বলেন, এই কথিত সাংবাদিকের অফিস প্রধান থেকে শুরু করে লেবার ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করা তার পেশা। কখনো ছবি তুলে, কখনো তথ্য বিকৃত করে সংবাদ তৈরির ভয় দেখিয়ে সে নিয়মিত চাঁদা দাবি করেন। এমনকি টাকা না পেলে ভূয়া প্রতিবেদন ছাপিয়ে ভূক্তভোগীদের সামাজিকভাবে হেয় করার কৌশলও গ্রহণ করে।
শ্রমিক নাজিম উদ্দীন বলেন, ফয়েজ আমাদের কয়েকজনকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দিয়ে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি কিছু টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি, কিন্তু পুরোটা না দেয়ায় সে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে।
শ্রমিক শফিকুল ইসলাম কাদা বলেন, সে শুধু ভয় দেখিয়েই থেমে থাকেনি, আমাদের ওপর অপবাদ দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে। তার মিথ্যা রিপোর্টে আমাদের পরিবার পর্যন্ত মানসিক চাপে রয়েছে।
সাবেক সভাপতি ওমর আলী বলেন, এসএম ফয়েজের কর্মকাণ্ডে খামারের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। একজন সাংবাদিক কখনোই এভাবে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে পারে না। এটি শুধু অনৈতিক নয়, ফৌজদারি অপরাধও বটে।
মানববন্ধনে আরও অভিযোগ করা হয়, ফয়েজের অপতৎপরতায় অন্তত ১০ জন শ্রমিক চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। ফয়েজ যেসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে, তার পেছনে কোনো তদন্ত নেই। বরং তিনি নিজেই শ্রমিকদের কাছ থেকে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এখন প্রতিশোধ নিচ্ছেন।
চিৎলা পাট বীজ খামারের সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, আমরা শ্রমিক, দিনমজুরী করে বেঁচে থাকি। এখানে সাংবাদিক নামধারী একজন ব্যক্তি এসে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অপসাংবাদিকতা বন্ধ করতে ফয়েজকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।
শ্রমিক নেতা মহিউদ্দীন বলেন, সাংবাদিকতা হলো মহান পেশা। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এই পেশাকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। আমরা এমন সংবাদকর্মীদের বিচার দাবি করি যারা অন্যায়ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।