শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় দেশে হাজার হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একই সময়ে সরকারি প্রাইমারী স্কুলের পাশাপাশি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আগের সরকারের আমলে সকল রেজিস্টার্ড স্কুল সরকারি হয়েছে। আর ইবতেদায়ী মাদ্রাসার অবস্থা কি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটি প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে গলা টিপে হত্যা করার জন্য যা যা দরকার ছিল তা করেছে স্বৈরাচার সরকার।
তিনি শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা জগদল দাখিল মাদ্রাসার হলরুমে সদর উপজেলার মাদ্রাসা শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা নূরুল হক।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় চিঠির মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল নতুন করে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার কোড নম্বর দেয়া যাবে না। মাদ্রাসা বন্ধ। এর কারণ হচ্ছে ইবতেদায়ী হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষার সাপ্লাই লাইন। সাপ্লাই লাইন যদি বন্ধ হয় তাহলে উপরের লাইনটিও বন্ধ হয়ে যাাবে।
ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় ছাত্র না থাকলে দাখিলে থাকবে না, আলিমেও থাকবে না, আর আলিমে না থাকলে ফাজিল কামিল থাকবে না। এটি তারা ভাল করে জানে। বিভিন্ন জায়গায় বিল্ডিং দিয়েছে এটা লোক দেখানো। উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে ছাত্র থাকবে না তখন এই বিল্ডিংগুলোকে স্কুলে রূপান্তরিত করা হবে। এই দেশে সেই ইতিহাস আছে।
বিগত সরকার এই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন ষড়যন্ত্র করেছিল। কারণ ইসলাম এবং আলেম ওলামারই ছিল তাদের প্রধান শত্রু। তারাই তাদের জন্য ছিলেন থ্রেট। এজন্য আলেম ওলামাদের ধরে, ডান্ডা বেড়ি পড়িয়ে হাতকড়া পড়িয়ে সারাদেশে ঘুরেছে ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য যাতে করে কেউ মাদ্রাসায় না পড়ে। এই তাদের ষড়যন্ত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ব্যর্থ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আপনাদের সন্তানরা জীবন দিয়ে পরিবর্তন ঘটালো। যাকে আমরা বিপ্লব বলছি। আসলে আমরা কি বিপ্লব করেছি? আমাদের চিন্তাজগতে, ভাবনার জগতে, কর্মের জগতে আমাদের কোন পরিবর্তন এসেছে? তাহলে তো বিপ্লব হয়নি। বিপ্লব মানেই পরিবর্তন। আপনি ২৪’র আগষ্টের আগে যা ভাবতেন, যা করতেন এখনও যদি তা ভাবেন আর করেন তাহলে তো কোন পরিবর্তন হয়নি।
আমি প্রশ্ন রাখছি, যে সন্তানেরা জীবন দিয়ে গেল, আমরা স্বাধীনভাবে, মুক্তভাবে, নির্ভয়ে-নির্বিঘ্নে কথা বলার পরিবেশ তৈরী করে দিয়ে গেল। যে পবির্তনটি না হলে এত বড় আলেম ওলামা দাড়ি-টুপি নিয়ে বোরকা পড়া লোকেরা একত্রিত হয়ে এতক্ষণ থাকতে পারতেন?
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবীর মো. কামরুল হাসান, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা ইকবাল হোসেন ও পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামিল মাদ্রাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা মো. মফিজউদ্দীন।
সুরিভিটা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন জগদল দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, খান বাহাদুর দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সামাদ, চাকলাহাট কে পি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ আর এম শহিদুল ইসলাম, ঘটবর টুনিরহাট দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. হাবিবুর রহমান প্রমূখ।
মতবিনিময় সভায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার সকল মাদ্রাসার প্রধান ও সহকারি শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।