বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নরের বিরদ্ধে যে তদন্ত শুরু হয়েছে এটি একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়।
আলোচিত তিন গভর্নরের সময়েই দেশে বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারি, রিজার্ভ চুরি, ব্যাংক লুট, ব্যাংক দখলের মতো ঘটনা ঘটেছে। তারা সবকিছু জেনেও প্রতিকারমূলক কোনো ব্যবস্থাই নেননি। উলটো লুটপাটকারীদের সহযোগিতা করেছেন।
যে কারণে তাদের সময়ে দেশে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। নজিরবিহীনভাবে টাকা পাচারের ঘটনা ঘটেছে। তিন গভর্নরের আমলেই দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নরের বিরদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, যদিও বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিন গভর্নরের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অপরাধ তদন্ত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম। তারপরও এটি একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল না। তাদের সময়ে যেসব বড় বড় কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর তদন্ত হওয়া উচিত। তাদের সময়ে ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীদের এত সুবিধা কেন দেওয়া হলো?
তিনি আরও বলেন, সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সময়ে বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। সরকারি ব্যাংক (বেসিক) লুট হয়েছে। রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুপারভিশন ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে কারণে লুটপাটকারীরা আরও সুযোগ পেয়েছে।
সাবেক গভর্নর ফজলে কবিরের সময়ে রিজার্ভ নিুমুখী হয়েছে। ব্যাংক দখলের সূচনা হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় লুটপাট হয়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা পাচার বেড়েছে।
সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সময়ে রিজার্ভ গিয়ে তলানিতে ঠেকেছে। ডলার সংকট প্রকট হয়েছে। টাকা পাচার আরও বেড়েছে। ব্যাংক দখল হয়েছে। এস আলম গ্রুপ ৭টি ব্যাংক দখল করে আমানতকারীদের টাকা পাচার করেছে। এই সময়ে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ওইসব ঘটনার সঙ্গে কারা কিভাবে জড়িত। তার দায় দায়িত্ব নিরূপণ হওয়া জরুরি।