
নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনায় যোগ দিতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন শীতল নিবাসে গেছেন দেশটির সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল। সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে সরকার গঠনের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। নেপালি সংবাদমাধ্যম খবরহাব এ তথ্য জানিয়েছে।
নেপাল সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউদেলের পক্ষ থেকে তরুণ বিক্ষোভকারী বা জেন-জি’দের সঙ্গে আলোচনা করবেন সেনাপ্রধান সিগদেল। বৈঠকের বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্কির শপথগ্রহণের সাংবিধানিক জটিলতা নিরসনের জন্য এই বৈঠক ডাকা হয়।
নেপালে সরকারি মদদে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছিল। তবে ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের ঘোষণা দিলে সেই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। পরে সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও সহিংসতা রোধ করা যায়নি। অবশেষে মঙ্গলবার পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।
বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত এক হাজার ৩০০ জন মানুষের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। খবরহাবের তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ৫১ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া, লুটপাট, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ কোটি রূপি। তবে এরপর কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে এবং সড়কে কিছু গাড়ি চলতেও দেখা গেছে। সেনা টহল অবশ্য এখনও জারি আছে এবং কিছু সড়কে এখনও প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, তার পরিমাণ কমতে শুরু করেছে।
চীন ও ভারতের মতো দুই পরাশক্তির মাঝে অবস্থিত নেপালে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। ২০০৮ সালে দেশটির রাজতন্ত্র বিলোপ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে একের পর এক সরকারের পতন হয়েই চলেছে।