
ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ হিসেবে এবার চালু হচ্ছে সরাসরি বিমান চলাচল। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই চলাচল দুই দেশের জনগণের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এই ঘোষণার পরই ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স জানায়, তারা ২৬ অক্টোবর থেকেই কলকাতা থেকে চীনের গুয়াংজু রুটে প্রতিদিন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে। এছাড়া দিল্লি থেকে গুয়াংজু রুটেও ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
২০২০ সালের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনও সরাসরি বিমান চলাচল হয়নি। হিমালয় সীমান্তে প্রাণঘাতী সেনা সংঘর্ষ এবং ২০২০ সালের মার্চ মাসে কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে ভারত চীনের সঙ্গে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিন্তু গত এক বছর ধরে দিল্লি ও বেইজিং সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের জন্য কাজ করছে। এর মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাস করার পদক্ষেপও রয়েছে।
ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত ঠিকভাবে নির্ধারিত নয় (অস্পষ্ট সীমান্ত) এবং এই সীমান্ত প্রায় ৩,৪৪০ কিমি বা ২,১০০ মাইল দীর্ঘ। ২০২০ সালে দুই দেশের সেনারা গালওয়ান নদী উপত্যকায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা এবং ৪ জন চীনা সেনা নিহত হন।
১৯৭৫ সালের পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে এটিই ছিল প্রথম প্রাণঘাতী সংঘর্ষ ছিল। এর ফলে দুদেশের সম্পর্ক স্থগিত হয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের কারণে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের তিক্ততা দিল্লি-বেইজিং সম্পর্ককে আরও এগিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছে। আগস্টে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দিল্লি সফর করেন। তখন তিনি বলেন, ভারত ও চীনকে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং সহযোগী হিসেবে দেখতে হবে।
আগস্ট মাসে সাংহাই সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাত বছরের মধ্যে প্রথমবার চীনে সফর করেন। ওই সময় তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দুজনই ভারত-চীন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতি দেন।