বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন
Title :
ওয়ান নিউজ বিডি-২৪ এর সম্পাদক ও প্রকাশকের মায়ের ইন্তেকাল বাকেরগঞ্জে জামায়াতে ইসলামের নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত আ.লীগের ডাকা লকডাউনের প্রতিবাদে শেরপুরে শ্রমিকদলের বিক্ষোভ মিছিল পলাশবাড়ীতে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব-বাদীর স্বামীর হাতের আঙ্গুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ বিবাদীর বিরুদ্ধে বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড মেহেরপুর পুলিশ সুপারের বাসভবনে আগুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত কবির সমর্থকদের কাফন মিছিল গলাচিপায় হাসান মামুনের আগমনে জনতার ঢল, উৎসবমুখর জনসভা প্রাঙ্গণ মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু, ধ্বংসস্তূপে ফিরছে গাজার মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • Update Time : শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৪ Time View
ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু, ধ্বংসস্তূপে ফিরছে গাজার মানুষ
ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু, ধ্বংসস্তূপে ফিরছে গাজার মানুষ

দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় শুক্রবার গাজার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ বিধ্বস্ত ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ধীরে ধীরে তাদের অবস্থান থেকে সরে যাচ্ছে। ফলে গাজা নগর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে মানুষের ফিরে আসার ঢল নেমেছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। গাজা নগরের শেখ রাদওয়ান এলাকায় নিজের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ইসমাইল যায়দা বলেন, আল্লাহর রহমতে আমার ঘর এখনও দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু চারপাশের সব ধ্বংস হয়ে গেছে, পুরো পাড়া উধাও।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা (গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৯টা) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ভোরে ইসরায়েলি সরকার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ অনুমোদন করে। এর মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আংশিক সেনা প্রত্যাহার ও পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার পথ খুলেছে।

চুক্তি অনুযায়ী, হামাস ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর পর ইসরায়েল ২৫০ জন দীর্ঘমেয়াদি ফিলিস্তিনি বন্দি এবং যুদ্ধের সময় আটক আরও প্রায় ১ হাজার ৭০০ জনকে মুক্তি দেবে। চুক্তি কার্যকর হলে গাজায় প্রবেশ করবে খাদ্য ও চিকিৎসা-সামগ্রীবাহী শত শত ট্রাক। লাখো মানুষ তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়ার পর এই সহায়তা তাদের টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার কিছু প্রধান নগর এলাকা থেকে সরে যাবে। তবে পুরো ভূখণ্ডের প্রায় অর্ধেক অংশের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতেই থাকবে। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনারা সেখানে থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে হলে ভালো, না হলে কঠিন পথেও আমরা তা অর্জন করব।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে ইসরায়েলি সেনারা পূর্বাঞ্চল থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে। তবে কিছু এলাকায় এখনো ট্যাংকের গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরেও কিছু ইসরায়েলি সেনা তাদের অবস্থান গুটিয়ে সীমান্তের দিকে চলে গেছে। যদিও ভোরে সেখানে গুলির শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল ধরে গাজা নগরের দিকে যাওয়া সড়ক থেকেও সরেছে।

গাজার বাসিন্দা মাহদি সাকলা বলেন, যখন যুদ্ধবিরতির খবর শুনলাম, সঙ্গে সঙ্গে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। ঘরবাড়ি কিছুই নেই, সব ধ্বংস হয়ে গেছে। তবুও ফিরে আসা, সেটাই আমাদের জন্য আনন্দের। দুই বছর ধরে আমরা ভাসমান জীবনের মধ্যে ছিলাম।

হামাসের নির্বাসিত নেতা খলিল আল-হায়্যা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে যুদ্ধ শেষ। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন—উভয়পক্ষেই এই চুক্তির ঘোষণা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে। গত দুই বছরে ইসরায়েলের অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার শিশু। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মা করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, হামাস ২০ জীবিত জিম্মিকে দ্রুত মুক্তি দেবে, তবে নিহত জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারে সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে এখনও কিছু জটিলতা রয়েছে। বন্দি বিনিময়ের তালিকা প্রকাশিত হয়নি। হামাস চায়, ইসরায়েলে আটক শীর্ষ ফিলিস্তিনি নেতাদের মুক্তি দেওয়া হোক।

এ ছাড়া ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার প্রশাসন ও হামাসের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। হামাসের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী সরে যাওয়া এলাকায় তারা নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করবে। তবে যোদ্ধারা রাস্তায় ফিরবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রবিবার মধ্যপ্রাচ্য সফরের কথা জানিয়েছেন। তিনি সম্ভবত মিসরে অনুষ্ঠেয় চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সেখানে যাবেন। ইসরায়েলি পার্লামেন্টের স্পিকার আমির ওহানা তাকে নেসেটে বক্তব্য দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 onenewsbd24.com
Developed by: FAZLY RABBY
Tuhin