পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় ৩ শতাধিক সৌরবাতি বসানো হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে। এগুলোর অধিকাংশই অকেজো হয়ে পড়ে আছে কয়েক বছর ধরে। অনেক বাতির অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সড়ক অন্ধকার থাকায় বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড।
স্থানীয়রা জানান, সৌরবাতি গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করলে পুনরায় ফিরবে আলো। এলাকায় কমে আসবে অপরাধমুলক কর্মকান্ড।
তথ্যনুযায়ী ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে টিআর ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় উপজেলায় প্রায় ৩১৮ টি স্ট্রিট সৌরবাতি স্থাপন ও হোমে এক হাজার ৩৪৮ টি সৌরবাতি ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৮ হাজার ২৮৪ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করে নেটওয়ার্ক ফর ইউনিভার্সাল সার্ভিস এন্ড রুলার এডভান্সমেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে স্থাপনের পাঁচ থেকে ছয় মাস পর থেকেই বাতিগুলো নষ্ট হতে থাকে।সৌরবাতি ঠিকমত জ্বলছে কি-না মাঝে মাঝে তা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও স্থাপনের পর কোনো খোঁজই রাখেনি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। ফলে সন্ধ্যা হলে সড়কে আঁধার নেমে আসে।যে উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল, তা কার্যত ভেস্তে গেছে। এতে ক্ষোভের অন্ত নেই পঞ্চগড়ের সদর উপজেলাবাসীর।
জানা যায়, চুক্তি আছে সৌরবাতি স্থাপনের তিন বছর বাতি জ্বলছে কিনা দেখাশোনা করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।সৌরবাতি স্থাপনের মোট ব্যয়ের ১০ শতাংশ জামানত হিসেবে ছিল। স্থাপনের কিছু দিনের মধ্যে বাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তীতে জামানতের টাকাও নিতে আসেননি। ছয় বছর পরে, সম্প্রতি জামানতের প্রায় ৪৪ লাখ টাকা ছাড় করে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস।
সরজমিনে সদর উপজেলার শুড়িভিটা,ডাঙ্গাপাড়া,ঝাকুয়াকালী, দাড়িয়াপাড়া, পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদ, বুড়িপাড়া, বোদাপাড়া এলাকায় রাতে গিয়ে দেখা যায়, খুঁটি দাড়িয়ে থাকলেও সেখানে বাতি অকেজো। কোনোটাতেই আলো জ্বলার ব্যবস্থা নেই।
এলাকাবাসী জানান, সৌরবাতি বসানোর কিছু দিন পর থেকেই আর বাতি জ্বলেনি। সদর উপজেলায় বার বার জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সচেতন ব্যক্তি বলেন, সৌরবাতি যতগুলো লাগানোর কথা ছিল।কিন্তু তার অর্ধেক বাতিও লাগানো হয়নি। তারপরেও যেসব সৌরবাতি লাগানো হয়েছে তার অধিকাংশই নিন্মমানের। যে কারণে লাগানোর কিছু দিন পরেই সে সব বাতি নষ্ট হয়ে গেছে।
চারমাইল এলাকার মাহাবুব বলেন, সৌরবাতি নির্মাণের ছয়মাস থেকে এক বছরের পর আর এসব বাতি কখনই জ্বলে নাই। এতো টাকা খরচ করে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ করার কোন ব্যবস্থা নাই। তবে যেগুলো সৌরবাতি বাড়িতে দেওয়া হয়েছে সেগুলো কিছু সংখ্যক আলো দেয়।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: জিয়াউর রহমান বলেন, সৌরবাতি প্রকল্পের জামানত ছিল মুল বরাদ্দের ১০ শতাংশ।এতদিন নিতে আসেনি। সম্প্রতি জামানতের অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো:জাকির হোসেন বলেন, যে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে কাজ হয়েছে। আমরা চাহিদা পাঠাবো। নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী কাজ হবে।