ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী আনন্দবাজারের পুরাতন বাঁশবাজার এলাকায় খাস জমি লীজ দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে প্রশাসন ও বাজারের ব্যবসায়ীরা বিপরীতমুখী অবস্থা বিরাজ করছে।
বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসের লোকজন বন্দোবস্ত দেয়া জায়গা পরিমাপ করতে গেলে তাদের উপর ব্যবসায়ীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মোহাম্মদ ইশতিয়াক ভূঁইয়া।
এ সময় অন্তত ১০/১২ আহত হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সহযোগিতায় আনন্দ বাজারে অভিযান চালায়। এ সময় মাছ বাজারে অবৈধ দখলে থাকা বেশ কয়েকটি দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।
এদিকে বিকেলে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। এ সময় তারা সরকারি লোকজনদের উপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লীজ বাতিলের আন্দোলনকে দমানোর জন্য মামলা দিয়ে হয়রাণি করা হচ্ছে। মূলত পুরাতন বাঁশবাজারের প্রায় ২১ শতক খাস জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ থেকে মালামাল লোড-আনলোডের কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান বাজারে প্রবেশ করে, কিন্তু নির্দিষ্ট লোড-আনলোড স্থান না থাকায় ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
কিন্তু সম্প্রতি জেলা প্রশাসন কতিপয় ৩৩ জন ব্যক্তির নামে এই জায়গা লীজ প্রদান করে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসন কেউই এখন পর্যন্ত লীজ প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করেননি, কেন এতো গোপনীয়তা—তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এই নামবিহীন অবৈধ লীজ বাতিল করে জায়গাটি পুনরায় মালামাল ওঠানামার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। অন্যথায় বাজারের সকল ব্যবসায়ীবৃন্দ বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মোহাম্মদ ইশতিয়াক ভূঁইয়া বলেন, দখলদার চক্রের হাত থেকে বাজারের খাস জায়গাটি উদ্ধার করে সরকারি বিধি অনুযায়ী ৩৩ জন ব্যক্তির মাঝে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু একটি সন্ত্রাসি মহল সরকারি কাজে বাধা দিয়ে অস্থিরতা তৈরির করছে। ইতিমধ্যে সরকারি কাজে বাধা দেয়ায় মঙ্গলবার একটি মামলা হয়েছে এবং সরকারির লোকজনদের উপর হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে আরো একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।