গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে আর দেশে ফেরেননি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সাকিব আল হাসান। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। মাঝে দেশের মাটিতে টেস্টকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ‘নিরাপত্তার অভাবে’ সাকিবের সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তবে বাংলাদেশের সাবেক অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলতে চান মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
গত বছর ভারত সফরে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব আল হাসান। সংবাদমাধ্যমকে আরও জানিয়েছিলেন, ঘরের মাঠে গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকায় খেলে টেস্ট থেকেও অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। বাকি থাকা ওয়ানডে ফরম্যাট থেকেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর সাকিব নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কিন্তু ক্রিকবাজ–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছেন, এখন পর্যন্ত তিনি কোনও ফরম্যাট থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেননি, ‘না, সত্যি বলতে আমি কোনও ফরম্যাট থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেইনি।’
তবে নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছেন, ঘরের মাঠেই বিদায় বলতে চান তিনি ‘হ্যাঁ, শতভাগ। আমি মনে করি, এটা আমার চেয়ে বেশি আমার ভক্তদের জন্য। যদি সেটা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই হবে আমার আর ভক্তদের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া।’
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে সাকিব মূলত বাংলাদেশ থেকে দূরে রয়েছেন। জুলাইয়ের আন্দোলনের পর ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহের জেরে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এসব কারণে দেশে ফেরা বা জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনা আপাতত অনিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নীরব থাকার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সাকিব। এই প্রসঙ্গে তিনি ক্রিকবাজকে বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার অবদান অনেক সময়ই ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে কিছু সংবাদমাধ্যমে, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, কিছু সাংবাদিক আর অনলাইন পোর্টাল বানানো গল্প ছড়িয়েছে, যেগুলো মানুষকে ভুলভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে। কারণ, বাংলাদেশে আমি যা করেছি, সেটা আগে কেউ করেনি। তাই সেটা অনেকের জন্য হজম করা কঠিন ছিল। এখন কেউ একই কাজ করলে (ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্ট), তেমন প্রতিক্রিয়া হয় না, কারণ আমি প্রথম ছিলাম—এটাই ভালো এবং খারাপ দু’দিকই।’
সমালোচনা প্রসঙ্গে সাকিব আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, একটা নির্দিষ্ট সময়ের একটা ঘটনা আমার বিরুদ্ধে গেছে। হয়তো মানুষ অন্য কিছু আশা করেছিল, কিন্তু আমি তখন সেটা করতে পারিনি বা বিষয়টা বুঝতেও পারিনি। তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তাই পরিস্থিতিটা আমার জন্য কঠিন ছিল। আমি তাদের অবস্থানটা বুঝি এবং সম্মান করি। কোনও আফসোস নেই, বরং এখন মানুষ বিষয়টা ধীরে ধীরে আরও ভালোভাবে বুঝতে শুরু করেছে।’